মালদ্বীপের মডেল কন্যা রাউধা আতিফ আত্মহত্যা করতে পারে না। আত্মহত্যা বলে ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এরপরও মেয়ের মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানতে মামলা করতে চান তার বাবা মোহাম্মদ আতিফ। আজ দুপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বের হওয়ার সময় স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তিনি তার এ ইচ্ছের কথা জানান। আর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে যান। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন। সেখানে তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বের হওয়ার সময় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের উত্তর দেন। তবে এ সময় কেবল রাউধার বাবা কথা বলেন। তদন্তকারী মালদ্বীপ পুলিশ কর্মকর্তারা কথা বলতে চাননি।
রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ বলেন, রাজশাহী এসে মেয়ের মরদেহ দেখার পর থেকেই তিনি মানতে পারছেন না রাওদা আত্মহত্যা করেছে। তার মন কিছুতেই মেনে নিতে চাচ্ছে না তার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে। তাই আগেও বলেছেন, এখনও বলছেন এ মৃত্যুর পেছনে রহস্য আছে। তাই ময়না তদন্তের রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ করে মেয়ের মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানতে মামলা করতে চান তিনি। এজন্য সিদ্ধান্তও প্রায় নিয়ে ফেলেছেন। প্রস্তুতি শেষে রাজশাহীতেই মামলা করবেন ডা. আতিফ।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. আতিফ বলেন, বাবা হিসেবে নয় চিকিৎসক হিসেবে তিনি তার মেয়ের মরদেহ দেখেছেন। আর তিনিও ফরেনসিক মেডিসিন পড়েছেন। রাউধার মরদেহ দেখে তার মনে হয়নি যে, সে আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া রাজশাহীতে আসার পর ক্যাম্পাসে গিয়ে নিজের মতো করে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। সেখান থেকে মনে এমন অনেক প্রশ্ন জেগেছে যার উত্তর পাওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতে খায়ের আলম বলেন, তারা এই বিষয়টি জানেন না। রাউধার বাবা যদি এমন কিছু বলে থাকেন তাহলে বলতেই পারেন। তার সেই অধিকার আছে। তবে মামলা করতে চাওয়ার কথা তারা জানেন না। এর আগে প্রখ্যাত ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদকন্যা মডেল ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রী রাউধা আতিফের মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মনসুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের টিম গঠন করা হয়। রাউধার মরদেহ ময়না তদন্তে ওই টিমের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক এনামুল হক ও সাবেক অধ্যাপক এমদাদুর রহমান। ময়না তদন্ত শেষে গত ১ এপ্রিল দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজশাহীর হেতমখাঁ গোরস্থানে মালদ্বীপের মেয়ে রাউধা আতিফের মরদেহ দাফন করা হয়। এ সময় পরিবারের সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৯ মার্চ ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় রাউধার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। এই মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাউধা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার