একেবারেই ভিন্নভাবে নববর্ষকে বরণ করলো 'পরিবর্তন চাই' নামক সংগঠনটি। 'দেশটাকে পরিষ্কার করি' শ্লোগানে বুকে ঝাড়ু আঁকা লাল-সাদা টি-শার্ট গায়ে চড়িয়ে ২৫০-এর অধিক স্বেচ্ছাসেবকের দল নিয়ে ঝাড়ু হাতে ভোর ৬টা থেকে শুরু করে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১০টি দলে ভাগ হয়ে অংশগ্রহণ করেছে পরিচ্ছন্নতার কর্মসূচিতে। 'পরিবর্তন চাই'-এর সঙ্গে এই কর্মসূচির সহযোগী হিসেবে ছিল বাপা, সবুজপাতা, গ্রিন ভয়েস, মাস্তুল, প্রাক্তন ক্যডেট ফোরাম, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ আরও অনেকগুলো সংগঠন।
এই কার্যক্রমের আরেকটি বিশেষ দিক ছিল পহেলা বৈশাখে বহুল প্রচলিত ইলিশ খাওয়ার সংস্কৃতির প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদের অংশ হিসাবে 'পরিবর্তন চাই' এর 'দেশটাকে পরিষ্কার করি' কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ২৫০-এর অধিক স্বেচ্ছাসেবীরা খাবারের তালিকা থেকে ইলিশকে বাদ দেন। যেহেতু এখন ইলিশের মৌসুম নয় আর ডিমসহ ইলিশ নিধন ইলিশের স্বাভাবিক প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যাহত করে, তাই 'পরিবর্তন চাই' ইলিশ মাছের পরিবর্তে রুই মাছ ভাজা আর নানা প্রকার দেশীয় ভর্তা দিয়ে এইবারের পহেলা বৈশাখের খাবারের আয়োজন রেখেছে।
ভিন্নতা শুধু পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি আর ইলিশ বর্জনেই ছিলো না, ভিন্নতা চোখে পড়েছে পুরো কর্মসূচি জূড়েই। দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো পহেলা বৈশাখে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতি বছর নানা ধরনের বিজ্ঞাপন দূষণ করে থাকে। কাগজের হাত পাখা, কাগজের টুপিসহ নানান জিনিসে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের এবং পণ্যের বিজ্ঞাপন ছেপে প্রচারের উদ্দেশ্যে উৎসবে আসা মানুষের হাতে তারা এসব বিলি করে থাকে। এতে করে দুইভাবে পরিবেশের ক্ষতি হয়। প্রথমত, কাগজের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছ নিধন বাড়ে। দ্বিতীয়ত, উৎসবে আসা মানুষ এই কাগজের পাখা, টুপিসহ অনান্য জিনিস গুলো রাজপথে ও পার্কে যেখানে সেখানে ফেলে আবর্জনার স্তূপ তৈরি করে।
'পরিবর্তন চাই'-এর প্রধান সমন্বয়ক ফিদা হক জানায়, 'দেশটাকে পরিষ্কার করি' ইভেন্টের মাধ্যমে আমরা মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি অন্যায় আর বদ অভ্যাসের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগাতে সক্ষম হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি সবাই মিলে চেষ্টা করলে ঢাকা এখন যেখানে বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় এক নম্বরে আছে, সেই অবস্থান বদলে অচিরেই ঢাকাকে সুন্দর পরিচ্ছন্ন এবং বসবাসের উপযুক্ত একটি শহরে পরিণত করতে পারবো।