আমাদের দেশে মাসে দুই-এক বোতল মদ পান করলে আমরা তাকে মাতাল বলে থাকি। কিন্তু যদি ওই ব্যক্তিটি বছরে ১০০ বোতল মদ পান করে তাহলে আপনি তাকে কোন কাতারে রাখবেন। এটা কিন্তু মাথাপিছু হিসাব। আর্থাৎ একজন ব্যক্তি বছরে এর থেকেও অনেক বেশি মদ পান করে থাকেন। তবে আমাদের মতো উয়ন্নয়শীল দেশগুলোতে এই বিলাসিতা নয়। বিশ্বের বিত্তশালী দেশগুলিতে মানুষের গড় মদ্যপানের হিসেব এই রকমই। গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে এইডস, এইচআইভি, টিউবারকিউলোসিস বা হিংসাত্মক ঘটনার জেরে মৃত্যুর তুলনায় অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মৃতের সংখ্যা বেশি।
সম্প্রতি পৃথিবীর কোন দেশে কত মদ্যপান করা হয়, তা বের করতে এক সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা গেছে, ধনী দেশগুলোতে বছরে মাথাপিছু ১০০ বা তার বেশি বোতল খরচ হয়। দ্য অর্গানাইজেশন অফ ইকনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, সংক্ষেপে OECD-র সদস্য ৩৪টি দেশের মানুষের উপর এই সমীক্ষা করা হয়েছে। সংগঠনের সেক্রেটারি-জেনারেল এঞ্জেল গুর্লা জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে ক্রমেই বাড়ছে মদের পিছনে অর্থব্যয়ের প্রবণতা। তার দাবি, নারী ও কমবয়সিদের মধ্যে মদ্যপানের অভ্যাস আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে এইডস, এইচআইভি, টিউবারকিউলোসিস বা হিংসাত্মক ঘটনার জেরে মৃত্যুর তুলনায় অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মৃতের সংখ্যা বেশি। মদ্যপানের নেশায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ইসরায়েল, আইসল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, পোল্যান্ড ও সুইডেনের বাসিন্দারা। তুলনায় রাশিয়া, ব্রাজিল, চীন ও ভারতে মদ্যপায়ীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়েনি। মদের নেশা বাড়ার পিছনে তার সহজলভ্যতা ও চটকদার বিজ্ঞাপনকেই দায়ী করা হয়েছে।
তবে মজার কথা হলো ১৯৯২ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে হিসেবে OECD সদস্য দেশগুলিতে মদ্যপানের হার ২.৫ শতাংশ কমেছে। OECD সদস্য দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মদ্যপান করেন এস্তোনিয়া, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড ও চেক রিপাবলিকের নাগরিকরা।
বিডি-প্রতিদিন/১৫ মে, ২০১৫/মাহবুব