ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জনসংখ্যার দিক দিয়ে মারমাদের স্থান দ্বিতীয়। অধিকাংশ মারমাদের বসবাস বান্দরবান জেলায়। বতর্মানে মারমা জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। তাছাড়া কক্সবাজার ও পটুয়াখালীতে কিছু মারমা বসবাস করে। কিছু কিছু মারমা নিজেদেরকে 'মগ' নামে পরিচয় দিয়ে থাকে।
মারমারা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে আসে মিয়ানমার থেকে। এই জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও বর্ণমালা রয়েছে। মঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত মারমা নৃ-গোষ্ঠীর সমাজ ব্যবস্থা পিতৃতান্ত্রিক ও এরা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী। মারমাদের ১০টি গোত্রের উপস্থিত পাওয়া যায়। গোত্রগুলো হচ্ছে: রিগো বা খ্যংসা, কক্দাইংসা, মারোসা, ক্যক্ফ্যাসা, ফ্রাংসা, থংসা, প্যালেঙসা, ওয়ইংসা, মুরিখ্যংসা, লংদুসা।
অধিকাংশ মারমাই পাহাড় ও বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল। বতর্মানে মারমাদের অনেকেই শিক্ষিত। তারা চাষাবাদের পাশাপাশি চাকরি করেও জীবিকা নির্বাহ করছে। জুম চাষ ও বিভিন্ন কাজে মারমা আদিবাসী নারীরা পুরুষদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে। তারা পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রমী। চাকরি থেকে শুরু করে সংসারের সমস্ত কাজ দেখাশুনা করে। তাই আদিবাসী মারমা সমাজে মেয়েদের সম্মান বেশি। এসব কাজের ফাঁকে কাপড় বোনাসহ হাতের তৈরি নানা রকম কাজ করে। মারমারা বেশি ভাগ হাতে তৈরি পোশাক ও বার্মীজ কাপড় পড়ে থাকেন।
ঐহিত্যগত মারমা সমাজ ব্যবস্থাপনাকে গ্রাম, মৌজা ও সার্কেল তিন পর্যায়ে ভাগ করে পরিচালনা করা হয়। গ্রাম পরিচালনায় প্রধান হচ্ছেন "কারবারী"। মোজা পর্যায়ে "হেডম্যান" এবং সার্কেল প্রধান হচ্ছে রাজা বা মাং। বতর্মানে মারমাদের দুটি সার্কেল বিদ্যমান। খাগড়াছড়িতে মং সার্কেল ও বান্দরবানে বোমাং সার্কেল।
বান্দরবান উপজাতীয় কালচারাল একাডেমির পরিচালক মং নু চিং মারমা বলেন, জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ এ তিনটি অধ্যায়কে মারমারা নিজেদের সামাজিক রীতিনীতি ও আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজসিদ্ধ (আবদ্ধ) করেছে। মারমা সমাজের বিভিন্ন গোত্র ও উপ-গোত্রের মধ্যে রীতিনীতি, আচার-অনুষ্ঠান পালনের ক্ষেত্রে কিছু কিছু ব্যতিক্রম ও সূক্ষ্ম তারতম্য রয়েছে। রীতিনীতি অনুসরণ ও আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে মারমা সমাজে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২১ জুলাই, ২০১৫/ রশিদা