পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপরের ওজন স্তর যে উত্তরোত্তর ছিদ্র হচ্ছিল কয়েক দশক ধরে, তার হার সম্প্রতি অনেকটাই কমেছে। এই প্রথম হাতেনাতে তার প্রমাণ পেয়েছে নাসা।
নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের বানানো ক্লোরিনঘটিত রাসায়নিক দ্রব্য তৈরি আর তার ব্যবহার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যাওয়ায় ওজন স্তর ছিদ্র হওয়ার হার অন্তত ২০ শতাংশ কমেছে। ওই হারে কমতে থাকলে ২০৬০ থেকে ২০৮০ সালের মধ্যে ওজন স্তরের ছিদ্র অনেকটাই কমে যাবে। তখনও যে সামান্য ছিদ্র থাকবে ওজোন স্তরে, তা পৃথিবীর বাসিন্দাদের পক্ষে আর ততটা বিপজ্জনক হবে না।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জেরে ক্লোরিনঘটিত রাসায়নিক দ্রব্য বা ক্লোরোফ্লুরোকার্বনস (সিএফসি’স) তৈরি ও তার ব্যবহার একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় এক দশক ধরে। ২০০৫ সাল থেকেই ওজন স্তর মেপে চলেছে নাসা। এ বার ওজোন স্তর মাপা হয়েছে নাসার ‘অরা’ উপগ্রহ থেকে।
মূল গবেষক মেরিল্যান্ডে নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের বায়ুমণ্ডল বিজ্ঞানী সুজান স্ট্রাহান বলেছেন, ‘‘পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপরের ওজন স্তরে ক্লোরিনঘটিত যৌগের পরিমাণ কমার স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি আমরা। এই প্রথম হাতেনাতে তার প্রমাণ মিলেছে।’’
ক্লোরিনঘটিত ওই রাসায়নিক যৌগগুলি বাস্পীভূত হওয়ার পর জমা হয় বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে। সেখানে সূর্য থেকে বেরিয়ে আসা অতিবেগুনি রশ্মি ওই ক্লোরিনঘটিত যৌগগুলিকে ভেঙে দেয়। আর তার ফলে বেরিয়ে আসে ক্লোরিন গ্যাসের অণু। সেই ক্লোরিন অণুই স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে থাকা ওজন স্তরটিকে ছিদ্র করে চলেছে। তার পরিমাণ যত বেড়েছে, ওজন স্তরের ছিদ্রটাও বেড়েছে ততটাই। ওই ওজনই অতিবেগুনি রশ্মি ও মহাজাগতিক রশ্মিকে পৃথিবীতে ঢুকে পড়তে দেয় না। অতিবেগুনি ও মহাজাগতিক রশ্মি পার্থিব প্রাণের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ওজনের স্তরে ছিদ্র বাড়ছিল বলে অতিবেগুনি ও মহাজাগতিক রশ্মি বেশি করে ঢুকে পড়তে শুরু করেছিল পৃথিবীতে। কিন্তু এ বার ওজনের স্তরে সেই ছিদ্র কমার স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে বলে নাসা জানিয়েছে। ফলে, অতিবেগুনি ও মহাজাগতিক রশ্মি কম ঢুকবে পৃথিবীতে। সূত্র : আনন্দবাজার
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন