১ জুলাই, ২০২২ ২১:৫২

বর্ষায় সেজেছে পাহাড়

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

বর্ষায় সেজেছে পাহাড়

পাহাড় মানে সবুজ। পাহাড় মানেই নীল আকাশে শুভ্র সাদা মেঘের ভেলা। আর এ পাহাড়ের বুক চিরে আছড়ে পড়ছে অবিরাম জরোধারা। এমন দৃশ্য কেবলই বর্ষাতে দেখা মিলে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে। রূপ বৈচিত্র্যের এক অন্যন্য ভাণ্ডার যেন এ পাহাড়। 

নয়নাভিরাম দৃশ্যপট। আছে শত শত ঝর্ণা, গিরিখাদ, আর আঁকা-বাঁকা নদী। এখানে প্রকৃতি যেন উজার করে দিয়েছে নিজেকে। তাই  গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, কিংবা বসন্তে এ পাহাড়ে রূপের জৌলুস থাকে সারা বছরই। তবে পার্থক্য কেবল ঋতুর সাজে। বর্ষাতে পাহাড় যেন থাকে পূর্ণ যৌবনে। একটু বৃষ্টি নামলেই নীল আকাশের মেঘের ভেলায় ভাসতে থাকে পাহাড়। সারাদিন চলে নীল, সাদা ও সবুজের লুকোচুরি খেলা। সন্ধ্যার আকাশে গোধূলীর রঙ ছড়াতেই ঝাঁক বেঁধে আসে বনের পাখিরা। তাদের খুনসুটি দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। অপরূপ সৌন্দয্যে ভরপুর সমৃদ্ধ রাঙামাটির পাহাড় পর্যটকদের কাছে অনেকটা রূপ কথার গল্পের মতই। তাই তো এখানে এসে প্রকৃতির প্রেমে পরেনি এমন মানুষ খুব কমই আছে। 

রাঙামাটি পর্যটন সূত্রে জানা যায়, বর্ষার শুরু থেকেই রাঙামাটিতে যাত্রা শুরু হয়েছে পর্যটকদের। এখনো আসছে হাজার হাজার পর্যটক। জেলার আশপাশের পর্যটক ছাড়াও আসছে বিদেশীরাও। পরিবার- আত্মীয়, স্বজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সবাই ছুটছে হ্রদ পাহাড়ের দেশে অর্থাৎ রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে। এমনিতেই পাহাড়ে রয়েছে পর্যটকদের আনন্দ ও মনোরঞ্জন জোগানোর অসংখ্য নৈসর্গিক পর্যটক কেন্দ্র। শুধু রাঙামাটিতেই আছে-পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতু, ডিসি বাংলো, পরওয়েল পার্ক, পেদাটিংটিং, সুবলং ঝর্ণা, রাঙামাটি পার্ক, সুখী নীল গঞ্জ, ও আসামবস্তী-কাপ্তাই সড়ক। এছাড়া রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের নীল জলে নৌ ভ্রমণের মত রোমাঞ্চকর পরিবেশ তো রয়েছেই। এসব দেখে পর্যটকদের আনন্দ উল্লাসের ফুয়ারা বেড়েছে কয়েকগুণ। পাহাড় এখন পর্যটক উৎসবে মেতেছে। উৎসবের আমেজ ছাড়িয়েছে পুরো পাহাড় জুড়ে। 

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, রাঙামাটিতে পর্যটন মৌসুমের আমেজ বইছে। শান্ত পরিবেশ। প্রকৃতিও সেজেছে আপন রূপে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য পাহাড়ে ঘুরার এটাই উত্তম সময়। অবকাশ কাটানোর জন্য দূর-দূরান্ত থেকে আসছে পর্যটকরা। তাই রাজস্ব আয়ও বেড়েছে কয়েকগুন। পর্যটকদের নিরপত্তার জন্য আছে পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ। 
এছাড়া দেশের যে কোনো স্থান থেকে রাঙামাটিতে আসার জন্য সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা থেকে রাঙামাটি যেতে সরাসরি চালু রয়েছে বিলাসবহুল বাস সার্ভিস। রয়েছে এসি বাসের সুবিধা। ঢাকার সায়েদাবাদ, কমলাপুর, ফকিরাপুল, মতিঝিল, কলাবাগান প্রতিদিন এমনকি রাতেও ছাড়ে বাসগুলো। চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া যায় খুব সহজে। চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৭৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পর্যটন শহর রাঙামাটি। চট্টগ্রাম শহর থেকে রাঙামাটি আসতে সময় লাগবে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। চট্টগ্রামের অক্সিজেন বাস স্টেশন। সেখান থেকে ছাড়ে পাহাড়িকা, সৌদিয়া, এস আলম। ভাড়াও কম। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর