রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

লাঙ্গল জেতাতে মাঠে বিএনপি

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় লাঙ্গল জেতাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপির একটি অংশ। এ সুযোগ লুফে নিয়ে দিনকে দিন ভোটের মাঠে শক্তিশালী হয়ে উঠছেন জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী আতাউর রহমান লেনিন। নৌকা প্রতীক নিয়ে হেভিওয়েট প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন আবদুল হাই আকন্দ, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়ে নারিকেল গাছ নিয়ে নিজ নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী। ধানের শীষ নিয়ে শহীদুল ইসলাম শহীদ এবং লাঙ্গলের জোয়ার কাঁধে নিয়ে পৌর এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন আতাউর রহমান লেনিন। আর মশাল প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় আছেন শরীফুল ইসলাম বিপ্লব। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় বিএনপির সাবেক এমপি আবু রেজা ফজলুল হক বাবলুসহ তার অনুসারীরা দিন-রাত লাঙ্গল প্রতীক পাওয়া আতাউর রহমানের পক্ষে প্রকাশ্যে গণসংযোগ করছেন। ইতিমধ্যে পাড়াটুঙ্গি কাঠগড়া এলাকায় বিএনপির তিনটি নির্বাচনী প্রচারণা কেন্দ্র বন্ধ করে সেখানে লাঙ্গলের প্রচারণা চালাচ্ছে বিএনপির সমর্থকরা। ভোটের মাঠে মাদকাসক্তদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার জন্যও ধীরে ধীরে ছিটকে পড়ছেন শহীদুল ইসলাম শহীদ। কথা হয় স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিজানুর রহমান মিজানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিএনপির অনেক নেতা গোপনে এবং প্রকাশ্যে জাপা প্রার্থীর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। ধানের শীষের বদলে তারা লাঙ্গলের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ফলে লাঙ্গলের জোয়াল দিন দিন শক্ত হচ্ছে।’ এ ছাড়াও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা জানান, বিএনপির সাবেক মেয়র মানসুরুর রহমান খানের ছেলে সাইফুল ইসলাম বিএনপি থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হন। ফলে তারাও অদৃশ্য হয়ে কাজ করছেন লাঙ্গলের পক্ষে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জাকারিয়া হারুন বলেন, আবু রেজা ফজলুল হকের সঙ্গে বর্তমান বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদের কর্মকাণ্ডে ধানের শীষে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে মানসুরুর রহমান খান আমাদের সঙ্গেই আছেন।

নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আবদুল হাই আকন্দ অভিযোগ করে বলেন, দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী আমাকে দমাতে বিএনপির একটি অংশকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সঙ্গে কাজ করছেন। তবে ব্যক্তি এবং দলের ইমেজে আমার বিজয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাপ্পীর পক্ষে যারা প্রচারণা চালায় এদের মধ্যে ৯০ ভাগই মাদকাসক্ত। অবশ্য এসব অভিযোগের কথা অস্বীকার করে দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী বলেন, ‘পুরো মাঠ আমার দখলে রয়েছে। বিজয় নিশ্চিত জেনে একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’ স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার শহীদুল্লাহ জানান, ‘ভোটরে কেন্দ্র কইরা নেশাখোরদের উত্পাত বাইরা গেছে। দিনে প্রার্থীগোর লাইগ্যা প্রচারণা চালাইয়া টেহা পায়, সইন্ধ্যা হইলেই নেশায় বয়।’ শনিবার সারা দিন ভোটের মাঠে থেকে দেখা যায় বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে উপজেলা বিএনপির প্রথম সারির কোনো নেতা নেই নির্বাচনী প্রচারণায়। স্থানীয় বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন বাবলু এখনো পর্যন্ত ভোটের মাঠে নামেনি। যারাও বা নেমেছেন তাদের অধিকাংশই ধানের শীষ পাস করানোর বদলে জাপার সঙ্গে হাত মিলিয়ে নৌকা দমাতে ব্যস্ত হয়ে আছে। ফলে আশার আলো দেখতে পাচ্ছে জাতীয় পার্টি। সাইফুল ইসলাম নামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের এক ভোটার জানান, ‘বেশির ভাগ হিন্দু ভোটার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পীর পক্ষে যদি রায় দেয় তাহলে অনেকটা পিছিয়ে পড়তে পারেন নৌকা প্রতীক পাওয়া আবদুল হাই আকন্দ।’

সর্বশেষ খবর