সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

শেওড়াপাড়ায়ও ঘাঁটি গেড়েছিল জঙ্গিরা

গ্রেনেড কালো পোশাক উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার আগে পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারী জঙ্গিরা। ৪৪১/৮ নম্বর পশ্চিম শেওড়াপাড়ার নিচতলার ফ্ল্যাটটি গত পাঁচ মাস আগে জঙ্গিরা ভাড়া নিয়ে ঘাঁটি গেড়েছিল। এ সময় তারা নিজেদের পরিচয় দিয়েছিল বাংলা কলেজের ছাত্র হিসেবে। গতকাল সকালে এই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাড়ির মালিক নুরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। ভাড়াটিয়াদের তথ্য থানায় সরবরাহ না করার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত সূত্র জানায়, ভাটারায় গত ১৬ মে দুই সন্তানসহ এক দম্পতি মিলিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিল। পরে ওই বাসায় আরও পাঁচজন এসে অবস্থান নেয়। গুলশানে হামলার দুই দিন আগে অপারেশনে যাওয়া পাঁচ জঙ্গি ওই ফ্ল্যাটটিতে এসেছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছে। সর্বশেষ ওই ফ্ল্যাটটি থেকেই জঙ্গিরা আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হানা দেয়। গতকাল সরেজমিনে ৪৪১/৮ নম্বর শেওড়াপাড়ার ওই বাসাটিতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রধান গেট দিয়ে ?ঢুকেই ডানপাশে গ্যারেজ। বামপাশে একটি ফ্ল্যাট। ফ্ল্যাটটির দরজার পাশেই কলাপসিবল গেট। নিচতলায় কলাপসিবল গেটের বাইরে একটি এবং ভিতরে দুটি ফ্ল্যাট। বাইরের ফ্ল্যাটটিই ভাড়া নিয়েছিল জঙ্গিরা। জঙ্গিরা যে ফ্ল্যাটে ছিল সেখানে তিনটি কক্ষ। কোনো কক্ষে কোনো ধরনের আসবাবপত্র নেই। সামনের কক্ষটির খালি মেঝেতে একটি তোশক পড়ে আছে। বাড়ির মালিক নূরুল ইসলাম মিরপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তিনি ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। গ্রেফতারের পর তিনি দাবি করেছেন, মিরপুর থানা পুলিশকে কিছুদিন আগে নিচতলার ওই ফ্ল্যাটটির ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে তথ্য দিয়েছিলেন। নূরুল ইসলাম ওপেন হার্ট সার্জারির রোগী। এ জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদেও সতর্কতা অবলম্বন করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। নিচতলার অন্য এক ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া ইস্রাফিল জানান, তিনি গাড়ি চালক। তারা গত মে মাসে ওই বাসায় আসেন। মাঝে মধ্যেই ওই ফ্ল্যাটের ছেলেদের দেখেছেন। ২০-২৫ বছরের যুবকেরা সারাদিন বাসাতেই অবস্থান করতেন। বাড়ির পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকজন প্রতিবেশীর দাবি, গত এপ্রিলে শিক্ষার্থী পরিচয়ে এক তরুণ ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই বাসায় থাকত। তবে তাদের বাসার সামনে তেমন দেখা যেত না। ঈদের আগে কয়েকজন বাসা থেকে চলে যায়, ঈদের পরদিনও একজনকে দেখা গেছে। এরপর আর কাউকে দেখা যায়নি। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেছেন, বিভিন্ন সময় ডিএমপি থেকে ভাড়াটিয়ার তথ্য সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার ব্যাপারে তাগিদ দিলেও গ্রেফতারকৃত বাড়ির মালিকরা তাতে কর্ণপাত করেননি। তাদের সঙ্গে জঙ্গিদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর