রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাকস্বাধীনতা না থাকলে থাকবে না কোনো স্বাধীনতাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাকস্বাধীনতা না থাকলে থাকবে না কোনো স্বাধীনতাই

শাহদীন মালিক

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, বাকস্বাধীনতা না থাকলে কোনো স্বাধীনতাই থাকবে না। আমাদের জীবন পশুর জীবন হয়ে যাবে। স্বাধীন দেশে পশুর মতো বাঁচা যায় না। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি আয়োজিত ‘হুমকির মুখে বাকস্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সি আর আবরার, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ। ড. শাহদীন মালিক বলেন, এ দেশে একের পর এক বিভিন্ন আইনে ভাবমূর্তির বিষয়টি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে যুক্ত করা হচ্ছে। এটি মূলত করা হয় বাকস্বাধীনতা রোধ করার জন্য। তিনি বলেন, এখন যতগুলো আইন তৈরি হচ্ছে, প্রতিটি আইনেই বাকস্বাধীনতা খর্ব হয় এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। আমেরিকার ১৭৯১ সালের সংবিধানে বলা হয়েছে, বাকস্বাধীনতা খর্ব হয় এমন কোনো আইন সংসদে পাস করা যাবে না। অথচ, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমরা সেই গণতন্ত্রে যেতে পারিনি। আমরা রাজা-বাদশাহদের যুগে ফিরে গেছি।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, শাসকগোষ্ঠীর বাকস্বাধীনতা আছে। তারা বাকসন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ড. কামাল হোসেনদের বিরুদ্ধে যা খুশি বলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাকস্বাধীনতা প্রশ্নে দেশ উত্তর কোরিয়ার পথে যাচ্ছে। সি আর আবরার বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অধিকার। এটি কারও দান নয়। সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এখন পর্যন্ত ৪১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এর মধ্যে আটজন সাংবাদিক। রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সব জায়গায় শাসকদের কঠোর সমালোচনা হয়। এর মধ্য দিয়েই গণতন্ত্র টিকে থাকে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার ক্ষেত্রে বাধা এলে সেটা রাজনৈতিক ব্লাসফেমি। বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরারকে হত্যা করা হয়েছে মতপ্রকাশের জন্য। নিজেদের বাঁচার জন্য, রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রধান স্তম্ভ বাকস্বাধীনতা। জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, সেলফ সেন্সরশিপ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। কোথাও আর সমালোচনা করার জায়গা নেই। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু তার সবকিছুই প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।

সর্বশেষ খবর