খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে অনেকেই মাত্রাতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যা সমাধানে প্রথমেই অনেকে ভাত খাওয়া বন্ধ করে দেন—বিশেষ করে পেটের মেদ কমাতে। তাদের ধারণা, ভাত খেলেই মেদ জমে। কিন্তু সত্যিই কি ভাত মোটা হওয়ার জন্য দায়ী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু ভাত নয়, যেকোনো খাবার অতিরিক্ত খেলে ওজন বাড়তে পারে। একই সঙ্গে অনিয়মিত জীবনযাপন এবং শরীরচর্চার অভাবও ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। যদিও ভাত সহজে হজম হয় ও দ্রুত এনার্জি দেয়, তবু শুধুমাত্র ভাত খেয়ে, প্রোটিন ও সবজি বাদ দিয়ে জীবনযাপন করলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
তবে যারা শারীরিক শ্রম করেন, যেমন কৃষিজীবীরা, তাদের ক্ষেত্রে বেশি ভাত খাওয়াও কোনো সমস্যা তৈরি করে না, বরং তা শক্তি জোগায়।
পুষ্টিবিদদের মতে, আমাদের খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে। তার সঙ্গে যদি ময়দা, চিনি, প্রসেসড খাবার ইত্যাদি যোগ হয় এবং শরীরচর্চা একেবারে না করা হয়, তাহলে ইনসুলিন হরমোনের মাত্রা বাড়ে, যা চর্বি জমার জন্য দায়ী।
শুধু শরীরের ত্বকের নিচে নয়, দেহের ভেতরের অঙ্গের আশপাশেও এই চর্বি জমে যা অনেক বেশি বিপজ্জনক।
তাই ভাত খাওয়া বন্ধ করার কোনো প্রয়োজন নেই, বরং পরিমাণ বুঝে খেতে হবে। ভাতের সঙ্গে সবজি, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি রাখলে হজম ধীরে হয়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং দ্রুত ক্ষুধাও লাগে না।
অনেকে ব্রাউন রাইস খাওয়ার পরামর্শ দেন, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাউন রাইস আর সাদা ভাতের মধ্যে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও কার্বোহাইড্রেট লোডের দিক থেকে খুব বেশি পার্থক্য নেই। ঢেঁকিছাঁটা চাল ব্যবহার করা হলে তাতে ফাইবার বেশি থাকে, যা আরও উপকারী।
সবশেষে বলা যায়, ওজন বৃদ্ধির জন্য ভাতকে একা দায়ী করা ভুল। সঠিক পরিমাণে ভাত খাওয়া, সুষম খাদ্য গ্রহণ ও নিয়মিত শরীরচর্চাই স্বাস্থ্যকর জীবনের চাবিকাঠি।
সূত্র: আজতক বাংলা
বিডি প্রতিদিন/আশিক