জাপানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির প্রভাব ইতোমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী জুন মাসে জাপান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি রপ্তানি ২৬.৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যা জাপানের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুতর ধাক্কা।
এদিকে, ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া ২৫ শতাংশ শুল্কের আশঙ্কায় টোকিওতে উদ্বেগ বাড়ছে ।
টোকিও থেকে ফরাসি গণমাধ্যম এএফপি জানায়, জাপানে মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮ শতাংশই অটোমোবাইল শিল্পের সঙ্গে জড়িত। যেখানে বিশ্বের শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা টয়োটা ছাড়াও হোন্ডা, নিশানসহ অনেক বৃহৎ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জাপান সরকার ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ গাড়ি শুল্ক ও অন্যান্য বাণিজ্য কর থেকে ছাড় পেতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে একাধিক রাউন্ড আলোচনার পরও কোনো চুক্তি হয়নি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা যায়, জুন পর্যন্ত তিন মাসে জাপান ১৫৩.১ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার) বাণিজ্য উদ্বৃত্ত অর্জন করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বছরে ১১.৪ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১.৭ ট্রিলিয়ন ইয়েনে, যার মধ্যে শুধু গাড়ি রপ্তানি কমেছে ২৬.৭ শতাংশ। এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যাল ও গাড়ির যন্ত্রাংশ রপ্তানিও হ্রাস পেয়েছে। যা সামগ্রিক রপ্তানি হ্রাসে ভূমিকা রেখেছে।
জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ২২.৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যা টানা দ্বিতীয় মাসের পতন। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি ২.০ শতাংশ হ্রাস পেলেও রপ্তানির পতন ছিল আরও তীব্র। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও বড় বিনিয়োগকারী জাপান এখন বড় শুল্কের চাপের মুখে। জাপানের উপর ১০ শতাংশের সাধারণ শুল্ক ছাড়াও গাড়ি, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে অতিরিক্ত শুল্ক বসিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ট্রাম্প ২৪ শতাংশ ‘পারস্পরিক’ শুল্ক ঘোষণা করেন। যা পরে কিছু সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়। তবে এই জুলাই মাসের শুরুতে, ট্রাম্প নতুন দেশভিত্তিক শুল্ক হার ঘোষণা করেন, যার আওতায় জাপানের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা আগের ২৪ শতাংশ থেকে বেশি। এই শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
এদিকে, এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এই সপ্তাহান্তে ওসাকার ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে যোগ দিতে জাপান সফরে যাচ্ছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে টোকিওতে বৈঠকের কথা রয়েছে।
সূত্র : রয়টার্স
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত