শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
নিখোঁজের তিন দিন পর মিলল লাশ

টাকা লুট করতে শ্বাসরোধে ঢাবি শিক্ষিকাকে হত্যা

গাজীপুর প্রতিনিধি

টাকা লুট করতে শ্বাসরোধে ঢাবি শিক্ষিকাকে হত্যা

সাইদা গাফফার

নিখোঁজের তিন দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাইদা গাফফারের (৭১) লাশ গাজীপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ পাইনশাইল এলাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবাসন প্রকল্পের একটি ঝোপের ভিতর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের নির্মাণাধীন বাড়ির রাজমিস্ত্রির হেলপারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিহত সাইদা গাফফার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মৃত কিবরিয়া উল খালেকের স্ত্রী।

গ্রেফতারকৃতের নাম আনারুল ইসলাম (২৫)। সে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর থানার বুর্জুগ জামালপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুবে খোদা ও নিহতের পরিবার জানান, ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন অধ্যাপক সাইদা গাফফার। তিনি প্রায় ১১ মাস ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পানিশাইল এলাকার মোশারফ হোসেন মৃধার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ভাড়া বাসায় থেকে তিনি একই এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসন প্রকল্পের ভিতরে বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন তিনি। তার বাসার দরজা খোলা ছিল। পরে নিখোঁজের বিষয়টি তার ছেলেকে মোবাইল ফোনে জানান বাড়ির ঠিকাদার আনোয়ার হোসেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে অধ্যাপক সাইদার ছেলে ও মেয়ে সাদিয়া আফরিন কাশিমপুরে এসে মাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। এ ব্যাপারে তার মেয়ে সাহিদা আফরিন বৃহস্পতিবার কাশিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কাশিমপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মিজানুর রহমান জানান, সাধারণ ডায়েরি করার পর নির্মাণাধীন বাড়ির প্লটে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়। তদন্তের নানা তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্লটে কর্মরত রাজমিন্ত্রির জোগালি আনারুলকে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর থেকে বৃহস্পতিবার রাতে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে অধ্যাপক সাইদা গাফফারকে হত্যার কথা স্বীকার করে। গতকাল তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নির্মাণাধীন ওই বাড়ির পার্শ্ববর্তী (আনুমানিক ২০০ গজ দূরে) একটি ঝোপের ভিতর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় অধ্যাপক সাইদার লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সাউদ ইফখার বিন জহির বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনসহ আনারুলকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনার সময় প্রফেসর সাইদা গফফারের হাতে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে আনারুল। এ সময় তাকে বাধা দিলে অধ্যাপক সাইদার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ ওই ঝোপের ভিতর লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায় বলে আনোয়ারুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর