সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রতিটি ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিটি ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা  নিশ্চিত করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিল্প-কলকারখানাসহ প্রতিটি ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান সরকার জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, আমাদের জলাধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪০টি নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর ভবনে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন। উদ্বোধন হওয়া পাঁচটি বিভাগের ২৫টি জেলার ৩৯টি উপজেলার ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনও ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিল। খবর বাসস। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন এলাকায় যেসব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেখানেও অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থাটা থাকতে হবে।

যারা আমাদের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, স্থাপত্যবিদ বা প্রকৌশলী তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করলে সেখানে অগ্নিনির্বাপণের আধুনিক ব্যবস্থা যেন নিশ্চিত থাকে। পাশাপাশি কখনো আগুন লেগে গেলে সেটা নির্বাপণে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, জলাধারগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।

দুর্গত এলাকায় যেন দমকল বাহিনীর গাড়ি পৌঁছতে পারে, সেজন্য রাস্তার প্রশস্ততার পাশাপাশি পানির সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দমকল বাহিনীর এখন ২০ তলা পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা রয়েছে এবং ক্রমেই এই সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিয়মিত অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার আয়োজন এবং বহুতল ভবনে খোলা বারান্দা রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন সূচনা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে দমকল বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়। গতকাল দেশের ৩৯টি উপজেলার ৪০টি ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম নতুন করে চালু হলো। বর্তমানে সারা দেশে ফায়ার স্টেশন নির্মাণে তিনটি প্রকল্পের কাজ চলছে। তিন প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ফায়ার স্টেশনের মোট সংখ্যা হবে ৫৪৪টি।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ ছাড়াও অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করা, দেশে-বিদেশে ফায়ার ফাইটারদের উন্নত প্রশিক্ষণসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সংস্থাটির সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।

অত্যাধুনিক ও দক্ষ ফায়ার সার্ভিস সেবা নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দেশের অগ্নি ঝুঁঁকি ও অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলার পূর্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বাহিনী আমাদের প্রয়োজন। বিভিন্ন ঘটনায় অগ্নিনির্বাপণ কাজে ফায়ার ফাইটারদের দক্ষতা ও ত্যাগের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী ফায়ার স্টেশন এবং এর মূল্যবান যন্ত্রপাতি যথাযথভাবে সংরক্ষণেরও নির্দেশ দেন। অগ্নিকান্ড যাতে না ঘটে সে জন্য দেশের জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলেও আওয়ামী লীগ সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি যে কোনো প্রকার মজুদদারির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন। উৎপাদন বৃদ্ধির এবং দেশের সব জমি আবাদের আওতায় আনারও আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক উন্নত দেশে যেখানে এখন খাদ্যের জন্য হাহাকার। অনেক ইউরোপিয়ান দেশে ৭, ৮, ৯ পার্সেন্ট ইনফ্লেশন রেট। তারপরও আমরা কিন্তু আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

দেশের মানুষকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই যুদ্ধের কারণে বিদেশ থেকে যেসব জিনিস আমরা আমদানি করি সেগুলো আনা খুব কষ্টকর হয়ে গেছে, পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক দেশ তাদের উৎপাদিত পণ্য আর রপ্তানি করছে না বা তারাও বিপদে আছে। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশে আমাদের যে মাটি, মানুষ আছে সেটাই ব্যবহার করে আমাদের নিজেদেরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। সরকারপ্রধান বলেন, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। যেখানে যার যতটুকু আছে তা আবাদ করবেন। নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস নিজেরা উৎপাদন করে নিজেদের ব্যবহার করার ব্যবস্থা নিতে হবে। যেন কারও মুখাপেক্ষি হয়ে আমাদের থাকতে না হয়। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন।

সর্বশেষ খবর