শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র দাখিল কাল

শেষ মুহূর্তে চলছে নানা জল্পনাকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে কাল। কে হচ্ছেন বঙ্গভবনের পরবর্তী বাসিন্দা, তা নিয়ে শেষ মুহূর্তে চলছে নানা জল্পনাকল্পনা। ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা বলছেন, পরীক্ষিত, অভিজ্ঞ এবং গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকেই বঙ্গভবনে বসানো হচ্ছে। গত মঙ্গলবার রাতে সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করার সব ক্ষমতা দেওয়া হয় দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। গত তিন দিনেও কে হচ্ছেন দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি, তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি। তবে তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতৃত্ব এবং রাজনীতিবিদের পাল্লাই ভারী বলে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতা জানিয়েছেন। জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি পদে আলোচনায় নতুন নতুন নাম যুক্ত              হচ্ছে। এত দিন রাষ্ট্রপতি পদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নাম ছিল ব্যাপক আলোচনায়। দুই দিন ধরে সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নাম আলোচনায় এসেছে।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের তিনজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, শেষ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি পদে চমক দিতে পারেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তবে তারা মনে করেন, রাজনীতিবিদদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি করা হলে দলের জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং আমলা থেকে করা হলে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করা হতে পারে। আবার চমক হিসেবে অন্য কাউকেও দেখা যেতে পারে ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। আওয়ামী লীগের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, সংসদীয় দলের ওই বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভূমিকাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনার মত আসে। পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ মনোনয়ন পান, এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ নেতারা একমত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। নির্বাচন নিয়ে জটিলতা এড়াতে এ সময়ে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কেন্দ্র করে এ ধরনের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় একজন দক্ষ, সাহসী এবং বিশ্বস্ত ব্যক্তিই রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকা জরুরি বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

আগামীকাল অথবা আজ জানা যেতে পারে রাষ্ট্রপতি পদে কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের মনোনীত প্রার্থীই হচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি, এটি মোটামুটি নিশ্চিত। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে।

আগামীকাল ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন জমা দিতে হবে। রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই ১৩ ফেব্রুয়ারি। প্রত্যাহার ১৪ ফেব্রুয়ারি। সংসদ ভবনে ভোট গ্রহণ হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। অবশ্য রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হলে ভোটের প্রয়োজন হবে না। সে ক্ষেত্রে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিনেই একক প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। আগামী ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে।

 

সর্বশেষ খবর