শরীরে দুর্গন্ধ এমনই এক সমস্যা যে, যার সমস্যা তিনি টের না পেলেও পাশের ব্যক্তিটি ঠিকই টের পেয়ে যান। পারফিউম বা ডিও ব্যবহার করলেই হয়তো সমস্যার সাময়িক সমাধান হয় কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয় না। সাধারণত ঘাম এবং হাইজিনের অভাব থেকেই গায়ে দুর্গন্ধ হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক নানা সমস্যা থেকেও হতে পারে এ সমস্যা।
শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে হলে প্রথমেই জানতে হবে কী কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে। তার কারণ জানা দরকার। যদি হাইজিনের অভাব বা ঘাম থেকেই এ সমস্যা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে তার প্রতিকার করাও অপেক্ষাকৃতভাবে সহজ। কিন্তু যদি শারীরিক কারণে এ ধরনের সমস্যা হয় তার প্রতিকার কিছুটা সময়সাপেক্ষ। সে ক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখাও প্রয়োজন।
শরীরের দুর্গন্ধের প্রতিকার
মূলত ঘাম ও হাইজিনের অভাবই এর কারণ। আমাদের শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত পানি ও কিছু মিনারেল ঘাম হিসেবে বের করে দেয়। এই ঘাম কিন্তু আসলে গন্ধবিহীন। ত্বকের ওপরের স্তরে পৌঁছানোর পর বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মেশার ফলে ঘামে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। একেকজনের ক্ষেত্রে ঘাম হওয়ার পরিমাণ আলাদা হলেও ঘাম আটকানোর কোনো উপায় নেই। এ ক্ষেত্রে হাইজিন যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি প্রয়োজন কেয়ার।
ঘামের দুর্গন্ধ কমানোর প্রধান অস্ত্র সঠিক হাইজিন। প্রতিদিন গোসলের সময় সাবান বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করেন এবং পুরো শরীর লুফার সাহায্যে ভালোভাবে স্ক্রাব করবেন। দুর্গন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা কমবে। আন্ডারআর্ম, কানের পিছনের অংশ, কোমর, ঘাড়, হাঁটু ও কনুইয়ের ভাঁজ ইত্যাদি অংশেই মূলত ঘাম জমে থাকে। তাই এই অংশ পরিষ্কার করার প্রতি বিশেষ যত্ন নিন। সম্ভব হলে গোসলের পানিতে পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন। বাড়িতে এসেনশিয়েল অয়েল না থাকলে পাতিলেবুর রস এবং খানিকটা বেকিং সোডা মিশিয়ে সেই পানিতে গোসল সেরে নিলে উপকার পাবেন। অনেকেই আন্ডারআর্মে হওয়া অতিরিক্ত ঘামের কারণে দুর্গন্ধের সমস্যা ভোগেন। এর মূল কারণ কিন্তু ব্যাকটেরিয়া। আন্ডারআর্ম, নিয়মিত শেভ বা ওয়্যাক্স করলে ওই অংশে ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে না। ফলে দুর্গন্ধও হয় না। দুর্গন্ধ কমানোর জন্য টি-ট্রি অয়েলও খুব ভালো। গোসলের পানিতে কয়েক ফোঁটা টি-ট্রি অয়েল মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল সেরে নিন। উপকার পাবেন। যাদের সমস্যা বেশি, তারা সামান্য পানির সঙ্গে দুই-এক ফোঁটা টি-ট্রি অয়েল মিশিয়ে সরাসরি আন্ডারআর্মে ব্যবহার করুন।