লাশ ফেলতে হবে, লাশ!
বোঝা গেল? এবার কত লাগবে, পরিষ্কার করে বললে ভাল হয়!
একটা-দু’টো নয়, প্রচুর লাশ চাই। দেশজুড়ে ওদের জাল ছড়ানো। তাই আমাদেরও সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে হবে। এমনভাবে ওদের মারতে হবে, যাতে গ্যাং-টা স্রেফ হাওয়া হয়ে যায়।
কোনো নাটকের সংলাপ নয়, ভাড়াটে খুনি সত্যিই ঠিক করা হয়েছে ক’দিন আগে। সত্যি বলতে কী, ঠিক কত লাশ ফেলতে হবে, ভাড়াটে খুনিদেরও জানা নেই। তাদের বলা হয়েছে, স্রেফ খতম করার কাজ চালিয়ে যেতে। সংখ্যাটা কয়েক লাখ হতে পারে, যদি সারা দেশ জুড়ে ঠিকঠাক নিকেশ করা যায় ‘তাদের’। যাদের খুদে চোখ, খাড়া কান, লম্বা লেজ আর ধারালো দাঁত। যারা থাকে স্যাঁতস্যাঁতে গর্ত খুঁড়ে, কিংবা অন্ধকার কোণে, ফাঁকফোকরে। তাদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়েই ‘ভাড়াটে খুনি’ ডেকেছে ভারতীয় রেল!
রেলের বিভিন্ন ‘জোন’-এর তরফে ইতোমধ্যেই ইঁদুর-নিধনে প্রসিদ্ধ বিভিন্ন সংস্থাকে মাঠে নামানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। রেলের মোদ্দা কথা— ইঁদুরের জ্বালায় আমরা অস্থির। কোনও ওষুধই ধরছে না। অতএব বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তাদের জব্দ করার উপযুক্ত পথ বাতলান। নিজেদের বাহিনী নামান। পাশাপাশি কাজটা যারা মোটের ওপর জানে, তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিন। ইঁদুর-বংশ ধ্বংস হওয়া চাই।
বংশের আবার নানা গোত্র। ধেড়ে, মেঠো, নেংটি...। কর্তারা জানাচ্ছেন, রেলের ওপর অত্যাচারে কোনওটিই কম যায় না। কোথাও ঘুমন্ত যাত্রীর পায়ে কামড় বসাচ্ছে নেংটি। কোথাও ধেড়ের উৎপাতে রেললাইনের ভিত ন়ড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্ণৌয়ের কাছে চারবাগ স্টেশন ভবনটা বহু যত্নে ঐতিহাসিক স্থাপত্যের আদলে তৈরি করা হয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, লম্বা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে সেই স্টেশনের তলার মাটিই ফোঁপরা করে দিয়েছে মেঠো মূষিকের দল।
মূলত স্টেশন, ইয়ার্ড বা কারশেডেই রাজত্ব ধেড়ে বা মেঠোদের। এ রাজ্যে শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনের নিত্যযাত্রীরা স্টেশনের লাইনের ফাঁকে ফাঁকে সেই বাহিনীর তাণ্ডব দেখে অভ্যস্ত। আর রেলের কামরায় (বিশেষত বাতানুকূল কামরা) বাসা বাঁধে নেংটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্ধ অবস্থায় এসি কামরা গরম হয়ে ওঠে। সেই কারণেই সেখানে বাচ্চা পাড়তে পছন্দ করে মা-নেংটিরা। তার পর গোটা পরিবার চলন্ত ট্রেনে উপদ্রব শুরু করে। মাস কয়েক আগেই উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পথে নেংটিদের হাতে হেনস্থা হতে হয়েছিল বেশ কয়েকটি পরিবারকে। সে যাত্রা ওষুধ ছড়িয়েও পুরোপুরি রেহাই মেলেনি। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বিডি-প্রতিদিন/ ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ