বিশ্বব্যাপী আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদি। মার্কিন সেনাবাহিনীর হামলায় বাগদাদি নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন দাবির পর ফের আলোচনায় উঠে আসেন এই জঙ্গি নেতা। শনিবার সিরিয়ায় ইদলিব প্রদেশে মার্কিন বাহিনীর হামলার প্রেক্ষিতে বাগদাদি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে তিন শিশুসন্তানসহ নিহত হন।
বাগদাদির মৃত্যুর পর বিশ্ব গণমাধ্যমে নতুন করে তার নাম আবারও আলোচনায় এসেছে। এর আগেও বাগদাদির মৃত্যুর খবর বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে ছড়িয়েছিল। তবে, এবার তার ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিজে বাগদাদির মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেন। তার এই মৃত্যুর সাথে জড়িয়ে থাকছে এক মার্কিন নারীর নাম যার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছিল বাগদাদি। মার্কিন স্পেশাল ফোর্সের যে অভিযানে বাগদাদির মৃত্যু হয়েছে সেই অভিযানটির নাম ছিল ‘কায়লা মুয়েলার’। এই কায়লা মুয়েলার ছিলেন একজন মার্কিন দাতব্য কর্মী, যাকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে হত্যা করেছিল বাগদাদি। অথচ ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, কায়লা মুয়েলারের নামেই ‘কুকুরের মতো’ মরতে হলো তাকে।
২৬ বছর বয়সী কায়লা মুয়েলার ২০১২ সালে সিরীয় শরণার্থীদের জন্য কাজ করতে প্রথম তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে যান। ২০১৩ সালে সিরিয়ার আলেপ্পোতে অপহৃত হন তিনি। এরপর দীর্ঘদিন তার অবস্থান নিয়ে রহস্যময়তা ছিল। জিম্মি থাকার সময় ২০১৪ সালে বাবা-মাকে পাঠানো এক চিঠিতে মুয়েলার লিখেছিলেন, ‘তোমরা কান্নাজড়িত যেসব চিঠি আমাকে পাঠিয়েছ, সেগুলোর কথা চিন্তা করে আমি কেবল চিঠিই লিখতে পারি। আমি জানি, তোমরা তীব্রভাবে আমাকে ফিরে পেতে চাও। আমি সে জন্য চেষ্টা করছি।’
২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিশ্চিত করেন যে, মুয়েলার নিহত হয়েছেন। আইএসের হাতে আটকের পর নিহত চতুর্থ মার্কিনী তিনি। তার মৃত্যু নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল। আইএস দাবি করেছিল, জর্ডানের বিমান হামলায় মুয়েলার নিহত হয়েছেন। তবে পেন্টাগন দাবি করছিল, আইএসই যে তাকে হত্যা করেছে। বাগদাদি নিজেই মুয়েলারকে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করেছে বলে জানিয়েছিলেন কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে নিজেকে ‘খলিফা’ হিসাবে ঘোষণা করেছিল আইএস-এর প্রধান বাগদাদি। সেই সময় থেকেই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় ছিলেন তিনি। গত পাঁচ বছর ধরে তার পিছু পিছু ঘুরছেন মার্কিন বাহিনী ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দারা। দীর্ঘ চেষ্টার পর অবশেষে সাফল্য পেলেন তারা।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক