রুশ নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগর বহরের নেতৃত্বে থাকা যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা বৃহস্পতিবার রাতে ডুবে যায়। গত বুধবার বিস্ফোরণে জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ইউক্রেনের দাবি, জাহাজ–বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল মস্কোভায়।
রুশপন্থী কিছু মানুষ এই যুদ্ধজাহাজ ডুবির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোলে শুক্রবার কিছু মানুষ শোক জানাতে জড়ো হন। ডুবে যাওয়ার আগ পর্যন্ত জাহাজটি রুশপন্থীদের শক্তি, অস্তিত্ব এবং আশার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
জাহাজ ডুবির ঘটনায় শোক জানাতে আসা ব্যক্তিরা ক্রিমিয়ার সেভাস্তপোলে ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন।
মস্কো ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্ল দখল করে নেয়।
জাহাজ ডুবির ঘটনায় শোক জানাতে আসা রাশিয়ার রিজার্ভ ক্যাপ্টেন সের্গেই গর্বাচেভ বলেন, মস্কোভা আমাদের ক্ষমতার প্রতীক, ১৯৯০ সালে নৌবাহিনীর পুনর্জন্মের প্রতীক।তিনি বলেন, জয় থাকবে, ট্রাজেডি থাকবে কিন্তু স্মৃতি আজীবন রয়ে যাবে।।
শোক জানাতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে জাহাজে সেবাপ্রদানকারী অনেকে ছিলেন। তারা নিরবে দাঁড়িয়েছিলেন। কেউ আবার রাশিয়ার সেনাবাহিনীর প্রতীক সেন্ট জর্জের ফিতা পরিধান করেন।
জর্জি পোলোয়াকভ নামে এক পুরোহিত বলেন, গত ২০ বছর যাবত যারা জাহাজটিতে সেবা দিয়েছে তাদের জন্য এটা একটা শোকাবহ ঘটনা।
রাশিয়ার রাজধানীর মস্কোর সঙ্গে মিল রেখে যুদ্ধজাহাজটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘মস্কোভা’। কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌবহরের গর্ব হিসেবে বিবেচনা করা হতো যুদ্ধজাহাজটিকে। সোভিয়েত আমলে নির্মিত এই যুদ্ধজাহাজ জর্জিয়া ও সিরিয়া যুদ্ধের পর ইউক্রেন যুদ্ধেও ভূমিকা রেখেছিল। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের সময়ও জাহাজটির তত্পরতা দেখা গিয়েছিল। শান্তিপূর্ণ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ বৈজ্ঞানিক গবেষণায়ও সহায়তা করেছে এই যুদ্ধজাহাজ।
গতকাল বৃহস্পতিবার কৃষ্ণসাগরে ডুবে যায় মস্কোভা। রাশিয়া বলেছে, জাহাজটিতে আগুন লাগে। পরে সেটি তীরের দিকে টেনে নেওয়ার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। তবে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ বলছে, জাহাজটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল তারা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করতে স্থল, আকাশ ও নৌপথে সেনা পাঠায়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল