প্রতিদিনই মন খারাপ করে দেওয়া খবর আসছে শ্রীলঙ্কা থেকে। খাবার, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতির সাথে দেশটিতে ওষুধের ঘাটতিও চরম আকার ধারণ করেছে। আর সেই সঙ্কট শ্রীলঙ্কানদের নিয়ে গেছে এক বিদীর্ণ দর্পণের সামনে, যেখানে দেখা প্রিয়জনের মুখগুলো চরম অসহায়ত্বে ঠাসা।
তেমন এক অসহায় মানুষ দাউদ মোহাম্মদ গনির গল্প তুলে এনেছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি। স্ত্রীর ক্যানসারে ভুগছেন, চলছে চিকিৎসা। কিন্তু ওষুধ নেই! একরাশ হতাশা নিয়ে কেবল সাহসটুকুকে সম্বল করে ওষুধের জন্য হন্যে হয়ে কলম্বোর ফার্মেসি থেকে ফার্মেসিতে ঘুরছেন গনি, বয়স তার ৬৩ বছর। বহু দোকান ঘুরেও স্ত্রীর জরুরি ওষুধটুকু জোগাড় করতে পারেননি তিনি।
কেবল একজন গনি নয় তার মতো লাখো শ্রীলঙ্কানের অবস্থাটা এখন এমনই। ওষুধের মতো জীবন রক্ষাকারী পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে। সবচেয়ে বেশি রুগ্ন হয়ে পড়েছে লঙ্কার স্বাস্থ্য খাত। প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ ফুরিয়ে গেছে।
নিরুপায় গনি বলেন, ‘এবারই প্রথম স্ত্রীর ক্যানসারের ওষুধ খুঁজে পেলাম না। সে খুবই অসুস্থ। আমি কী করব? খুব অসহায় বোধ করছি। তবে তাকে বাঁচাতে আমার যা যা করা দরকার তার সবটাই করব।’
৮৫ শতাংশ ওষুধই শ্রীলঙ্কাকে আমদানি করতে হয়। বৈদেশিক মুদ্রার শূন্যতা সেখানেই লঙ্কার লাগাম টেনেছে। দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার হাসপাতাল ও ফার্মেসিগুলোর প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রায় শেষ।
কলম্বোর লেডি রিজওয়ে হসপিটালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বিরাজ জয়সিংহে জানিয়েছেন, তাদের হাসপাতালে ছয় মাসের ওষুধ সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু তাঁদেরও ওষুধ সঙ্কট শুরু হয়ে গেছে।
বাধ্য হয়ে ওষুধসহ জরুরি চিকিৎসাসামগ্রীর দাবিতে বিরাজের মতো শত শত চিকিৎসক রাজপথে নেমেছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান-ব্যক্তি জরুরি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে লঙ্কান ওষুধ ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, এই সাহায্য যথেষ্ট নয়।
সূত্র: ফার্স্ট পোস্ট
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল