দক্ষিণ ইউক্রেনে নিপ্রো নদীর ওপর অবস্থিত কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস হওয়ার পর প্রচুর পরিমাণে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে যুদ্ধক্ষেত্রের বেশ কিছু অংশ বন্যায় ভেসে গেছে এবং গ্রামবাসীরা পালাতে বাধ্য হচ্ছেন।
জাতিসংঘের ত্রাণসহায়তাবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস ইউক্রেনের খেরসনের গুরুত্বপূর্ণ বাঁধটি ধ্বংসের ঘটনায় গুরুতর ও সুদূরপ্রসারী পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
বাঁধটি ধ্বংসের জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়া পরস্পরকে দায়ী করেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বাঁধটি কারা ধ্বংস করেছে, সে বিষয়ে তদন্তের জন্য কমিশন গঠন করা যেতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছেন। বুধবার এক টেলিফোন আলাপে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ‘রাশিয়া, ইউক্রেন, জাতিসংঘ এবং তুরস্ককে নিয়ে এই কমিটি করা যেতে পারে।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোন আলাপে এরদোয়ান আরও বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে শান্তি নিশ্চিত করতে আঙ্কারা তার দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত।
এদিকে বাঁধটি ধ্বংসের পর যুদ্ধাঞ্চলসহ আশপাশের একটা বড় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে ইতিমধ্যে হাজারো মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। তারা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের হিসাবমতে, বাঁধ ধ্বংসের জেরে প্রায় ৪২ হাজার মানুষ বন্যার ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। এই সংখ্যা বাড়তে পারে।
বাঁধটি থেকে অঞ্চলটির খেরসন শহরের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। গতকালই শহরটির নিম্নাঞ্চলের পানির স্তর ৩ দশমিক ৫ মিটার বেড়ে যেতে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের সহায়তা প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, বাঁধধসের ফলে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। খাদ্য, নিরাপদ পানি ও জীবিকা বিনষ্ট হবে। এই ঘটনা দক্ষিণ ইউক্রেনের উভয়পক্ষ নিয়ন্ত্রিত এলাকার হাজারো মানুষের জন্য মারাত্মক ও সুদূরপ্রসারী পরিণতি বয়ে আনবে।
মার্টিন গ্রিফিথস আরও বলেন, বাঁধধসের বিপর্যয়ের মাত্রা আগামী দিনগুলোতে পুরোপুরিভাবে বোঝা যাবে।
বাঁধধসের কারণে সৃষ্ট বন্যায় প্রাথমিকভাবে প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, বন্যার কারণে সম্ভবত ‘অনেকের মৃত্যু’ হয়েছে।
খেরসন অঞ্চলের নিপ্রো নদী রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় বাহিনীকে পৃথক করেছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কাখোভকা বাঁধটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে আছে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল