ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিরোধীদের ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর দুই এজেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াশিংটন পোস্টের’ এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের এই অভিযোগ নিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে উৎখাতে ভারতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি। গতকাল শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘যে সংবাদপত্র এবং সাংবাদিককে নিয়ে কথা হচ্ছে, তাদের দেখে মনে হয় যে ভারতের প্রতি কঠোর শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব পোষণ করে।’
‘তাদের কাজকর্মে সেই ধারাটা দেখতে পাবেন। ওদের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ধারণ করার বিষয়টি আপনাদের উপরেই ছেড়ে দিলাম। আমাদের কথা বলতে গেলে (আমাদের কাছে) ওদের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই’ -বলেও দাবি করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
এর আগে, গত ৩০ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন পোস্টের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, মালদ্বীপের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু ভারতের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের দিকে মনোনিবেশের ইঙ্গিত দিয়ে দ্বীপরাষ্ট্র থেকে ভারতীয় সেনা বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। মুইজ্জু বেইজিংয়ের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, এমনকি সম্ভাব্য সামরিক সহায়তা চুক্তির ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে ভারতীয় গোয়েন্দারা মুইজ্জুকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের উপায় অনুসন্ধানের জন্য মালদ্বীপের বিরোধী নেতাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করে। ‘ডেমোক্র্যাটিক রিনিউয়াল ইনিশিয়েটিভ’ শিরোনামের একটি অভ্যন্তরীণ নথি ওয়াশিংটন পোস্ট হাতে পেয়েছে। এতে মুইজ্জুকে অভিশংসনের জন্য একটি বিস্তারিত কৌশল ও রূপরেখা পাওয়া গেছে। পরিকল্পনায় মুইজ্জুর দলের কয়েকজনসহ ৪০ জন সংসদ সদস্যকে ঘুষ দেয়ার পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং অপরাধী চক্রকে অর্থ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
অভিযানের আনুমানিক ব্যয় ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৮৭ মিলিয়ন মালদ্বীপের রুপি ভারত থেকে দেওয়ার কথা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। কয়েক মাস ধরে গোপন আলোচনা সত্ত্বেও ষড়যন্ত্রকারীরা পর্যাপ্ত সংসদীয় ভোট পেতে ব্যর্থ হয়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মালদ্বীপকে অস্থিতিশীল করার বিষয়ে সতর্ক থাকায় পরে অভিশংসন প্রচেষ্টার জন্য অর্থায়ন বা এগিয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক