থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সীমান্ত উত্তেজনা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১১ জনই বেসামরিক নাগরিক।
থাই সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, সীমান্তে প্রস্তুত রাখা ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের মধ্যে একটি কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে বোমা বর্ষণ করে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে। সেনাবাহিনীর ডেপুটি মুখপাত্র রিচা সুকসুয়ানন বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আকাশ হামলা চালিয়েছি।"
থাইল্যান্ড ইতোমধ্যেই কম্বোডিয়ার সঙ্গে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে থাই যুদ্ধবিমান দুটি বোমা একটি সড়কে ফেলেছে। এই হামলাকে তারা ‘কম্বোডিয়ার সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে বেপরোয়া ও নৃশংস সামরিক আগ্রাসন’ বলে নিন্দা করেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে সংঘর্ষ শুরুর জন্য উভয় দেশই একে অপরকে দায়ী করছে।
থাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কম্বোডিয়ার গোলাবর্ষণে অন্তত ১১ জন বেসামরিক নাগরিক এবং একজন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২৪ জন বেসামরিক মানুষ ও ৭ জন সেনা। তবে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে কোনো হতাহতের খবর এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
থাই সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, কম্বোডিয়া আমাদের বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে মানবতাবিরোধী কাজ করেছে। আমাদের সার্বভৌমত্ব ও জনগণকে রক্ষার জন্য থাইল্যান্ড প্রস্তুত রয়েছে।
এই সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে থাইল্যান্ড বুধবার রাতে তাদের রাষ্ট্রদূতকে কম্বোডিয়া থেকে ফিরিয়ে আনে এবং কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ব্যাংকক থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি থাই সেনাবাহিনীর একজন সদস্য সীমান্তে পুঁতে রাখা একটি মাইন বিস্ফোরণে পা হারান। থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, এই মাইনটি সম্প্রতি কম্বোডিয়ার সেনারা বসিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোট আসিয়ান-এর বর্তমান চেয়ারম্যান এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
চীনও এই সংঘর্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল