আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে।
সোমবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করে আইসিসি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮০ বছর বয়সী দুতের্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি মাদকবিরোধী যুদ্ধে অংশগ্রহণের সময় ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি হত্যার জন্য অপরাধমূলকভাবে দায়ী। এই অভিযানের সময় হাজার হাজার ছোটখাট মাদক ব্যবসায়ী, ব্যবহারকারী ও অন্যদেরকে বিচার ছাড়াই হত্যা করা হয়। আইসিসির অভিযোগপত্র জুলাই মাসের হলেও সোমবারই তা প্রকাশ করা হয়। কিছু অংশে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
আইসিসির ডেপুটি প্রসিকিউটর মামে মানডিয়াই নিয়াং বলেন, দুতের্তে হত্যাকাণ্ডে পরোক্ষ সহযোগী হিসেবে দায়ী। প্রথম অভিযোগটি ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে দুতের্তের মেয়র থাকাকালীন দাভাও শহরে ১৯ জন হত্যার সাথে তার সম্পর্ককে কেন্দ্র করে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগ দুতের্তের প্রেসিডেন্ট থাকার সময় (২০১৬-২০২২) মাদকবিরোধী অভিযানের সঙ্গে সম্পর্কিত।
দ্বিতীয় অভিযোগ দেশজুড়ে ১৪ জন ‘উচ্চমূল্যবান লক্ষ্যবস্তু’ হত্যার সাথে সম্পর্কিত। তৃতীয় অভিযোগ গ্রাম পরিষ্কার অভিযানে ৪৫ জন হত্যা এবং হত্যাচেষ্টা সম্পর্কিত।
প্রসিকিউটররা উল্লেখ করেন, দুতের্তে ও তার সহযোগীরা ‘একটি সাধারণ পরিকল্পনা বা চুক্তি ভাগাভাগি করে- যাতে ফিলিপাইনে প্রাপ্ত অপরাধীদের (যারা মাদক ব্যবহার, বিক্রয় বা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হতো) হত্যাসহ সহিংস অপরাধের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা যায়।
দুতের্তে তার বর্বর মাদক অভিযানের জন্য কোনও ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। এই অভিযানে ছয় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর বহুগুণ হতে পারে।
দুতের্তে বলেছেন, তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের দমন করেছেন দেশ থেকে অপরাধ দূর করার জন্য। রদ্রিগো দুতের্তে প্রথম এশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে আইসিসিতে অভিযুক্ত হয়েছেন। তাকে তিন বছরের মধ্যে প্রথমবার হেগে, নেদারল্যান্ডস-এ আদালতের কাছে নেওয়া হয়েছে। মার্চ মাস থেকে তিনি সেখানে হেফাজতে আছেন।
তার আইনজীবী জানিয়েছেন, দুতের্তের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার কারণে তিনি বিচারিক পরীক্ষায় অংশ নিতে অক্ষম। মে মাসে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট কারাগারে থাকলেও দাভাও শহরের মেয়র পুনঃনির্বাচিত হন। তার ছেলে সেবাস্তিয়ান দুতের্তে তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন।
দুতের্তের সমর্থকরা অভিযোগ করেন, আইসিসি’কে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস। তিনি প্রকাশ্যে শক্তিশালী দুতের্তে পরিবারের সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত। আইসিসির কার্যকর ক্ষমতা সীমিত। তারা কেবল সংশ্লিষ্ট দেশের সহযোগিতায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারে। মার্কোস এর আগে আইসিসির সহযোগিতা করার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেন। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/একেএ