মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের ওপর নবম দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ ৩৩তম দিনের মতো গতকাল এ মামলার শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানিতে আসামি পক্ষে অংশ নেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান। সরকার পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ মামলার কার্যক্রম আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। শুনানিতে অ্যাডভোকেট শাহজাহান আসামি সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৪তম অভিযোগের বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন। এ অভিযোগে বলা হয়েছে, সাঈদীর নেতৃত্বে হোগলাবুনিয়ার হিন্দুপাড়ায় আক্রমণ এবং পরে শেফালী ঘরামীকে ধর্ষণ করা হয়। আইনজীবী শাহজাহান বলেন, ১৪তম অভিযোগে সাঈদীকে দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের রায়ে প্রসিকিউশনের প্রথম, দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ২৩তম সাক্ষীর ওপর নির্ভর করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম, দ্বিতীয় ও চতুর্থ সাক্ষী এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। উপরন্তু প্রথম সাক্ষী তদন্ত সংস্থায় আগে যে রিপোর্ট দাখিল করেছেন, তাতে জানিয়েছেন, জিয়ানগরে কোনো বীরাঙ্গনা নেই। এটি প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছে। তাহলে ১৪তম অভিযোগের বিষয়ে প্রসিকিউশনের শুধু একজন সাক্ষী থাকে এবং তিনি মধুসূদন ঘরামী। শুধু একজন সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এ অভিযোগে। কিন্তু মধুসূদন ঘরামী বলেছেন, তিনি তার স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা দেখেননি। স্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন, 'তোমাকে যে মুসলমান বানিয়েছে সে এসেছিল, তুমি পালাও।' কে তার স্বামীকে মুসলমান বানিয়েছিল, তা কি শেফালী ঘরামীর পক্ষে জানা সম্ভব? সম্ভব, যদি স্বামী মধুসূদন ঘরামী তাকে বলে থাকে। কিন্তু তাকে কে মুসলমান বানিয়েছিল সে কথা তিনি তার স্ত্রীকে বলেছেন মর্মে এভিডেন্সে কিছু নেই। বরং মধুসূদন ঘরামী জানিয়েছেন, পাড়ের হাটে তার স্ত্রীর যাতায়াত ছিল না। তার স্ত্রী কোনো রাজাকার এবং শান্তি কমিটির কোনো সদস্য বা চেয়ারম্যানকে চিনতেন না। সাঈদীকে মধুসূদন ঘরামী কাঠগড়ায় শনাক্ত করেননি। বরং তিনি বলেছেন, দেলোয়ার শিকদার নামে এক রাজাকার ছিল এবং তাকে স্বাধীনতার পর মেরে ফেলা হয়েছে।