বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন

লম্বা দৌড়ের ভোট শেষ হচ্ছে আজ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

শুরু হয়েছে সেই ২৭ মার্চ। শেষ হচ্ছে আজ। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের এর মধ্যে হয়ে গেছে সাত দফায় ভোট। এই এক মাসে ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চরম আকার ধারণ করেছে। অষ্টম দফায় আজ রাজ্যটির চার জেলার ৩৫ আসনে ভোট নেওয়া হবে। এর মধ্যে মালদা জেলায় ছয়টি, মুর্শিদাবাদ জেলার ১১টি, উত্তর কলকাতার সাতটি ও বীরভূম জেলার ১১টি আসন রয়েছে। ভোট শুরু হবে সকাল ৭টায় চলবে ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। আজকের ভোটে নজর থাকবে উত্তর কলকাতার বেলেঘাটা, জোড়াসাঁকো, শ্যামপুকুর, মানিকতলা, কাশীপুর-বেলগাছিয়া আসনগুলোতে, প্রতিটি কেন্দ্রেই জোর টক্কর হতে চলেছে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ও প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির মধ্যে। 

শ্যামপুকুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যটির নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজার প্রতিপক্ষ বিজেপির সন্দীপন বিশ্বাস ও ফরওয়ার্ড বøকের জীবন প্রকাশ সাহা। মানিকতলা কেন্দ্রে রাজ্যের আরেক মন্ত্রী (উপভোক্তা দফতর) ও তৃণমূলের সিনিয়র নেতা সাধন পান্ডের ভাগ্য নির্ধারত হতে চলেছে, তার প্রতিপক্ষ বিজেপির প্রতিপক্ষ সাবেক খেলোয়াড় কল্যাণ চৌবে ও সিপিআইএম প্রার্র্থী রূপা বাগচী। এ ছাড়াও বেলেঘাটা আসনে তৃণমূলের দীর্ঘদিনের বিধায়ক ও প্রভাবশালী নেতা পরেশ পালের প্রতিপক্ষ বিজেপির কাশীনাথ বিশ্বাস ও সিপিআইএমের প্রার্থী রাজীব বিশ্বাস। কলকাতার বাইরে বীরভূম জেলার বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রে এবার শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চলেছেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। তার প্রতিপক্ষ রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির সদস্য অনির্বাণ গাঙ্গুলী। রামপুরহাট কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস ব্যানার্জির প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির শুভাশিস চৌধুরী। মুসলিম অধ্যুষিত মালদার ছয়টি ও মুর্শিদাবাদ জেলার ১১টি আসনেও এবার তৃণমূল, বিজেপি ও সংযুক্ত মোর্চার (বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ) জোটের প্রার্থীদের মধ্যে কঠিন লড়াই হতে চলেছে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। এর মধ্যে অন্যতম মানিকচক কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, ইংলিশ বাজার কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের আরেক সাবেক মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, ভরতপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর প্রমুখ। করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় একদিকে যেমন নির্বাচনী প্রচারণার সময়সীমা ৪৮ ঘণ্টার বদলে ৭২ ঘণ্টা আগে শেষ করার কথা বলা হয়েছে, তেমনি রাজ্যটিতে সব ধরনের রাজনৈতিক রোড-শো, পদযাত্রা ও বাইক র‌্যালিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক জনসভাগুলোতেও ৫০০-এর বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে শেষ দফার নির্বাচনী প্রচারণায় ময়দানে সেই অর্থে স্টার ক্যাম্পেইনারদের কাউকেই দেখা যায়নি। পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে মমতা ব্যানার্জি, তৃণমূলের সংসদ সদস্য অভিষেক ব্যানার্জি- প্রত্যেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমেই প্রচারণা সামলেছেন। যদিও কভিড স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণার অভিযোগে কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আগামী ২ মে ভোট গণনা। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই ওই দিনই আসাম (১২৬টি আসন), কেরালা (১৪০), তামিলনাড়ু (২৩৪) ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পদুচেরিতে (৩০) আসনে বিধানসভার নির্বাচন ও দেশজুড়ে কয়েকটি উপনির্বাচনেরও ভোট গণনা।

আর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়টি মাথায় রেখে আগামী ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গণনার দিন ও তারপর  বিজয় সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। 

সর্বশেষ খবর