শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

চলে গেলেন কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা আলী শাহ গিলানি

চলে গেলেন কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা আলী শাহ গিলানি

চলে গেলেন কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলী শাহ গিলানি। ভারতের সময় বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ শ্রীনগরের হায়দারপোরায় নিজের বাসভবনে মৃত্যু হয় তার। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।  গিলানির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পিডিপি নেত্রী ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘গিলানির প্রয়াণে আমি শোকাহত। অনেক ক্ষেত্রেই তার সঙ্গে সহমত না হলেও নিজের বিশ্বাসের প্রতি অবিচল ও একনিষ্ঠতার জন্য তাকে শ্রদ্ধা করি। তার পরিবার ও অনুগামীদের প্রতি সমবেদনা জানাই।’ দীর্ঘদিন ধরেই রোগে ভুগছিলেন গিলানি। জম্মু ও কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন গিলানি। প্রথমে জামাত-ই-ইসলামী কাশ্মীর সংগঠনের সদস্য ছিলেন তিনি। এরপর কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে তৈরি করেন তেহরিক-ই-হুরিয়ত। দীর্ঘদিন ধরেই অল পার্টিস হুরিয়ত কনফারেন্সের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০২০ সালে সেই পদ ছাড়েন তিনি। তাকে ‘স্বাধীনতা যোদ্ধা’ উল্লেখ করে শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

গতকাল পাকিস্তানে জাতীয় শোক পালন করেছে দেশটি। তবে গিলানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এক রণপ্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে কাশ্মীরে তার বাড়ির আশপাশে। তার ভক্তরা সহিংসতা ঘটাতে পারেন, এই আশঙ্কায় তার দাফন অনুষ্ঠানে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছাড়া কাউকে উপস্থিত হতে দেয়নি পুলিশ। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রীনগরের ইন্টারনেট সার্ভিস এবং ভয়েস কল বেশির ভাগ এলাকায় স্থগিত করা হয়েছে।

বিবিসি লিখেছে, ভারত শাসিত কাশ্মীরে এই মুহূর্তে যে উত্তেজনা বিরাজ করছে তাতে এমন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অস্বাভাবিক নয়। এসব পদক্ষেপকে পুলিশ বর্ণনা করছে পূর্ব সতর্কতা হিসেবে। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে পড়ে এবং তা বন্ধ করার জন্য এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। উল্লেখ্য, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের ভিন্ন ভিন্ন অংশ নিয়ন্ত্রণ করে ভারত ও পাকিস্তান। তবে উভয় দেশই দাবি করে, পুরো কাশ্মীরই তাদের। ভারত শাসিত অংশে ৩০ বছর ধরে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছে। ফলে এ সময়ে সেখানে সহিংসতাও হয়েছে প্রচুর।

ভারতের দৃষ্টিতে গিলানি একজন বিভক্তি সৃষ্টিকারী ব্যক্তি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, তিনি সব সময়ই কাশ্মীরের স্বাধীনতার কথা বলতেন। তবে কাশ্মীর পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে যাক, এর পক্ষেই তিনি ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন। তার মৃত্যুতে ভারতের কাশ্মীরি নেতা এবং পাকিস্তানি রাজনীতিকরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। জম্মু কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছেন, গিলানির মৃত্যুতে তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত। ভারতের সঙ্গে যে কোনো রকম আলোচনার ঘোরবিরোধী ছিলেন তিনি।

সর্বশেষ খবর