শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি চান পুতিন

ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি চান পুতিন

যুদ্ধের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন। মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘রাশিয়ার কাছে মাথা নত করবে না ইউক্রেন।’ আর এই আবহেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মুখে সুর নরমের আভাস পাওয়া গেল। গতকাল পুতিন জানিয়েছেন ‘যুদ্ধের  অবসানই এখন লক্ষ্য।’ উল্লেখ্য, এর আগেও যুদ্ধ শেষ করার বার্তা দিয়েছিলেন পুতিন। কিন্তু তারপরেই আবারও ইউক্রেন অভিযানের গতি বাড়িয়েছিল রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের গলায় যুদ্ধের অবসানের বার্তা কি নেহাতই কোনো কৌশল? নাকি চাপের মুখে এবার সুর নরম করতে বাধ্য হচ্ছে রাশিয়া? এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।

মূলত বৃহস্পতিবার পুতিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো এ সংঘাতের অবসান ঘটানো। এ জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হোক, তা আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আর তা যত দ্রুত হয়, ততই মঙ্গল।’

পুতিন আরও বলেন, ‘যেকোনোভাবেই হোক আলোচনার মধ্য দিয়ে সব সংঘাতের অবসান হয়। (কিয়েভে) আমাদের প্রতিপক্ষরা এটা যত দ্রুত বুঝতে পারবে, তত ভালো।’ মস্কোর সামরিক প্রধান বলেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার দিকে এখন নজর দিচ্ছে রুশ বাহিনী। সেখানকার বাখমুত শহরটি এখন লড়াইয়ের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, আলোচনা করতে ও যুদ্ধের অবসান ঘটাতে প্রস্তুত তার কোনোরকম ইঙ্গিত দেননি পুতিন।  কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুরোপুরি বিপরীত। তিনি মাটিতে এবং আকাশে যা করছেন, তা এমন একজন ব্যক্তির কথা বলে যিনি ইউক্রেনের জনগণের ওপর হিংস্রতা চালিয়ে যেতে চান এবং যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী করতে চান।’ কিরবি এটাও জানিয়েছেন যে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তবে সেটা হবে রাশিয়ান নেতা আলোচনার বিষয়ে গুরুত্ব দেখানোর এবং ইউক্রেন ও মার্কিন মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ করার পরেই।’

অন্যদিকে রাশিয়া বলেছে যে ইউক্রেনই কথা বলতে অস্বীকার করছে। কিয়েভ পাল্টা বলেছে যে রাশিয়াকে অবশ্যই তাদের আক্রমণ বন্ধ করতে হবে এবং তাদের দখল করা সব অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে। তবেই আলোচনায় বসা হবে।

কয়েক দিন ধরেই ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের পেট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সরবরাহ নিয়ে আলোচনা চলছে। সে সম্পর্কেও দুদিন আগে পুতিন বলেছিলেন. ‘যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ ইউক্রেন যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পরোক্ষ যুদ্ধের অভিযোগও এনেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পুতিনের এ ধরনের আভাস এটাই প্রথম নয়, গত সেপ্টেম্বরেও সাংহাই করপোরেশন অরগানাইজেশন (এসসিও)-এর শীর্ষ সম্মেলনের পার্শ্ব বৈঠকে পুতিন বার্তা দিয়েছিল ‘যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ শেষ করার।’ কিন্তু তারপরই ঠিক উল্টো কাজ করতে দেখা যায় রাশিয়াকে। আরও তীব্র হতে থাকে যুদ্ধের গতি। এই ঘটনার তিন মাসের মাথায় ফের একবার যুদ্ধ শেষ করার কথা বললেন পুতিন।

সর্বশেষ খবর