শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঘৃণা ভাষণ নিয়ে দিল্লি পুলিশকে জবাবদিহির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

এক বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘৃণা ভাষণের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ক্ষুব্ধ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তা গতকাল জানতে চাইলেন দিল্লি পুলিশের কাছে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নির্দেশ, দুই সপ্তাহের মধ্যে দিল্লি পুলিশকে জানাতে হবে ওই ঘটনার তদন্তে এখন পর্যন্ত কী কী করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে হিন্দু যুববাহিনীর এক ধর্ম সংসদে মুসলিমদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হিংসার আহ্বান জানানো হয়েছিল। ‘হিংসাত্মক’ হতে ‘হিন্দুদের শপথ গ্রহণ’ করানো হয়েছিল। ওই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যে উত্তরাখন্ডের তীর্থশহর হরিদ্বারে আয়োজিত এক ধর্ম সংসদে ‘মুসলমানদের গণহত্যা’র ডাক দেওয়া হয়। দিল্লির ঘটনা পুলিশ উপেক্ষা করেছিল। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জনমত তীব্র হয়ে ওঠায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এফআইআর দাখিল করা হয় পাঁচ মাস পর ২০২২ সালের মে মাসে। সেই থেকে আরও আট মাস অতিবাহিত। অথচ একজনকেও গ্রেফতার করা হয়নি। মানবাধিকারকর্মী তুষার গান্ধী উদ্যোগী হয়ে দিল্লি পুলিশ কমিশনার রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন। তাঁর আবেদন, দিল্লি পুলিশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জনতাকে হিংসাত্মক করে তোলার ঘটনায় পুলিশকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এফআইআর দাখিল করে চার্জশিট জমা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। তিনি বলেন, আদালত অবমাননার বিষয়টি এখনই গুরুত্ব দিতে চান না। তিনি চান, দিল্লি পুলিশ কেন এখনো কিছু করেনি, সে জবাবদিহি করা হোক। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পি এস নরসিংহের এজলাসে গতকাল দিল্লি পুলিশের হয়ে হাজির হন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কে এম নটরাজ।

তিনি বলেন, এ বিলম্ব ইচ্ছাকৃত নয়। দিল্লি পুলিশ অভিযোগের যথার্থতা খতিয়ে দেখছে।

এই জবাবে ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ‘তদন্তের নামে কী করেছেন আপনারা? ঘটনা ঘটেছে ১৯ নভেম্বর। এফআইআর দাখিল করেছেন পাঁচ মাস পর মে মাসে। কেন এফআইআর করতে পাঁচ মাস সময় নিলেন? তার পরও কেটে গেছে আট মাস। কী করেছেন? কজনকে জেরা করেছেন? কজনকে গ্রেফতার করেছেন? তদন্তইবা কতটুকু হয়েছে?’ প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বলেন, এসব নির্দিষ্ট তথ্য তার কাছে নেই। সুপ্রিম কোর্ট তাকে দুই সপ্তাহের সময় দেন তদন্তসংক্রান্ত সব তথ্য পেশ করার জন্য।

দিল্লি ধর্ম সংসদের এ ঘৃণা ভাষণের ঘটনায় দিল্লি পুলিশ প্রথমে বলেছিল, হিন্দু যুববাহিনীর ওই অনুষ্ঠানে আপত্তিকর কোনো ভাষণ দেওয়া হয়নি। কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কেউ ঘৃণা ভাষণ দেননি। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে এলে সর্বোচ্চ আদালত দিল্লি পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হন এবং নতুন করে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশের পর দিল্লি পুলিশ গত বছরের মে মাসে এফআইআর দাখিল করে।

সর্বশেষ খবর