ভারতে সবাই একই পূর্বপুরুষের সন্তান এবং দেশে কোনো ‘অহিন্দু’ নেই বলে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন দেশটির কট্টর উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগবত। তিনি বলেন, হিন্দুত্বই হচ্ছে ভারতের মূল সংস্কৃতি এবং ভারতের দায়িত্বও হিন্দুদেরই। গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারতের সব মানুষই একই পূর্বপুরুষের সন্তান এবং দেশে ‘অহিন্দু’ বলে কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভগবত। তিনি দাবি করেন, ভারতের মূল সংস্কৃতি হচ্ছে হিন্দুত্ব, আর দেশের ঐক্য ও গৌরব রক্ষার দায়িত্ব হিন্দুদেরই। শনিবার ‘সংঘের শতবর্ষের যাত্রা : নতুন দিগন্ত’ শীর্ষক এক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ভগবত বলেন, ‘সংঘ সংগঠিত শক্তি গড়ে তোলে ক্ষমতার জন্য নয়, বরং ‘ভারত মাতার গৌরবের জন্য সমাজকে সংগঠিত করাই’ এর উদ্দেশ্য। শুরুতে অনেকে তা বিশ্বাস করেননি, কিন্তু এখন মানুষ বুঝতে পারছে।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই প্রশ্ন তোলেন- কেন আরএসএস কেবল হিন্দু সমাজ নিয়ে কাজ করে? তার উত্তর হলো, ‘ভারতের দায়িত্ব হিন্দুদেরই।’
ভগবতের ভাষায়, ‘আমাদের জাতিসত্তা ব্রিটিশরা তৈরি করেনি। ভারত প্রাচীনকাল থেকেই একটি জাতি। পৃথিবীর প্রতিটি জাতির একটি মূল সংস্কৃতি থাকে।
বহু মানুষ সেখানে বসবাস করলেও, তাদের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি একটিই হয়। ভারতের সেই কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি কী? যেভাবেই ব্যাখ্যা দিই না কেন, সেটি গিয়ে দাঁড়ায় ‘হিন্দু’ শব্দে।’
আরএসএস প্রধান বলেন, ‘ভারতে আসলে কোনো ‘অহিন্দু’ নেই। মুসলিম ও খ্রিস্টানরাও একই পূর্বপুরুষের সন্তান। হয়তো তারা তা জানেন না, কিংবা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেনে বা না জেনে, ভারতের সবাই ভারতীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করেন। তাই কেউ অহিন্দু নন। আর প্রত্যেক হিন্দুর বুঝতে হবে, হিন্দু হওয়া মানেই ভারতের জন্য দায়িত্ববান হওয়া।’
ভগবতের দাবি, হিন্দু সমাজের সংগঠনই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করে তোলে এবং এটি দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়; বরং সংবিধানের চেতনার সঙ্গেই সংগতিপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী হিন্দু সমাজ সবসময় পৃথিবীতে ঐক্য ও শান্তি স্থাপনের লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে। সনাতন ধর্মই হিন্দু রাষ্ট্র, আর সনাতন ধর্মের অগ্রগতি মানেই ভারতের অগ্রগতি।