৪ জুলাই, ২০২২ ০৮:৪১

হজে মাবরুরের প্রতিদান

নূর মুহাম্মদ রাহমানী

হজে মাবরুরের প্রতিদান

ফাইল ছবি

ইসলামের পঞ্চম রুকন হজ। এটি আর্থিক ও শারীরিক উভয়ের সংমিশ্রণ আছে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ তা বিত্তশালী মুসলমানদের ওপর ফরজ করেছেন। তা সওয়াব অর্জন ও পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তির অবারিত সুযোগ। হজে যাওয়ার আশা-আকাক্সক্ষা লালন করে না এমন মুমিন পাওয়া যাবে না। তবে শুধু হজ করলেই হবে না হজকে তাৎপর্যময় করে তুলতে হবে। হজ মাবরুর যেন হয় সে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

হজের প্রতিদান জান্নাত : মাবরুর তথা কবুল হজের রয়েছে বিরাট প্রতিদান। মহানবী (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘হজে মাবরুরের প্রতিদান একমাত্র জান্নাত।’ বোখারি। তিনি আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এ ঘরের হজ করল, অতঃপর কোনো অশ্লীল কথা বলেনি এবং কোনো পাপ করেনি, তাহলে সে এমনভাবে ফিরবে যেন আজ তার মা তাকে জন্ম দিয়েছে।’ বোখারি। এ হাদিসের ভিত্তিতে অনেক গবেষক আলেমরা বলেছেন, মা যখন বাচ্চা জন্ম দেয় তখন যেহেতু শিশুর কোনো পাপ থাকে না, তাই হজের মাধ্যমে সগিরা-কবিরা সব ধরনের পাপই মাফ হয়ে যাবে। মহানবী (সা.) হজরত আমর ইবনে আস (রা.)-কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ‘হজ আগেকার সব গুনাহ মিটিয়ে দেয়।’ মুসলিম।

হজ রিজিক বৃদ্ধির মাধ্যম : মহানবী (সা.) হজ ও ধারাবাহিক ওমরার মাধ্যমে মুসলমানদের আয়ু ও রিজিক বৃদ্ধি হওয়ার সুসংবাদ প্রদান করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ধারাবাহিক হজ ও ওমরা করতে থাক। এ দুটির ধারাবাহিকতা বয়স ও রিজিকে বৃদ্ধি ঘটাবে এবং গুনাহ নিঃশেষ করে দেবে যেমন হাপর লোহার ময়লা দূর করে দেয়।’ তিরমিজি।
দোজখ থেকে মুক্তির পরওয়ানা : মহানবী (সা.) সংবাদ দিয়ে রেখেছেন, দোজখ থেকে মুক্তির পরওয়ানা আরাফার দিনেই সবচেয়ে বেশি লেখা হয়। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহ বান্দাকে দোজখ থেকে যেদিন সবচেয়ে বেশি মুক্তি দেন তা আরাফার দিন থেকে অধিক নয়।’ মুসলিম।

হজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে উত্তম আমল : আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, কোন আমল সবচেয়ে উত্তম? তিনি বলেছেন, আল্লাহ ও তার রসুলের প্রতি ইমান আনা। বলা হলো, তারপর কী? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ। আবার বলা হলো, তারপর কী? তিনি বললেন, হজে মাবরুর। বোখারি।

জিহাদের ফজিলত লাভ : হজের প্রতিদান আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের প্রতিদানের সমতুল্য। আয়েশা (রা.) মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছেন, হে আল্লাহর রসুল, আমরা তো জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। আমরা কি জিহাদ করব না? তিনি বললেন, না, কিন্তু সর্বোত্তম জিহাদ হচ্ছে হজে মাবরুর।’ বোখারি।  তাই হজ যেন মাবরুর হয় সে জন্য হজের প্রতিটা আমল একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য করা। হজের প্রতিটা সুন্নত খুব গুরুত্ব দিয়ে আদায় করা। হজে রওনা হওয়ার আগে মানুষের পাওনা আদায় করা। খালেস দিলে তওবা করা। হজটা যেন বৈধ সম্পদ দিয়ে হয় সে ব্যাপারে খুব যত্নবান থাকা। হজ থেকে ফিরে আগের চেয়ে আমল বাড়িয়ে দেওয়া। সব ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে দূরে থাকা। দুনিয়ার ব্যাপারে মজে না যাওয়া। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হজে মাবরুর নসিব করুন। আমিন।

লেখক : মুফতি ও মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম বাগে জান্নাত, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর