মোহনচাঁদ শীল। কলকাতার খ্যাতনামা চিকিৎসক তিনি। জীবনে হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন। তাই রাস্তাঘাটে হামেশাই দেখা হয়ে যায় তাদের অনেকের সঙ্গে। তিনি নিজে চিনতে না পারলেও ডাক্তারকে মনে রেখে দিয়েছেন রোগী বা রোগীর পরিবার। তাই কথা বলতেই হয়। তাদের সঙ্গে করমর্দন হয় তার। কিন্তু, তার পরিণতি যে এতটা মারাত্মক হবে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি ওই চিকিৎসক।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, গত শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মোহনচাঁদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন পাড়ার সেলুনে চুল কাটাতে। কলকাতার এন্টালি থানা এলাকার সাবেক কনভেন্ট লেন বা ননীগোপাল রায় চৌধুরী সরণির বাড়ি থেকে সেলুনের দূরত্ব কয়েক মিনিটের পথ। ৭৩ বছরের চিকিৎসক তাই পায়ে হেঁটেই যাচ্ছিলেন। সিআইটি রোডের মুখে সন্ধ্যা সুইটস। সেখানে পৌঁছতেই এক মধ্য বয়সী নারী তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন। নারী তাঁকে নাম ধরে সম্বোধন করেন। সেই নারীর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই তিনি আরও খানিকটা পথ হাঁটেন। তার পর সেলুনের পথে যাওয়ার আগে ওই নারীর সঙ্গে করমর্দনও করেন।
সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু বাড়ি ফিরেই আক্কেলগুড়ুম। ডান হাতের অনামিকায় যে বড়সড় হিরের আংটি ছিল, তা গায়েব। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও হদিশ মেলে না তাঁর আংটির। শেষে তাঁর সন্দেহ হয় ওই নারীকেই। পরের দিনই রবিবার তিনি এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, লিখিতভাবে অভিযোগ করে ওই দিনের ঘটনার কথা জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক। তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছেন, ওই নারীকে তিনি চিনতে পারেননি। তবে ওই নারী নিজেকে একজন রোগী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন।
এক তদন্তকারী বলেন, “ওই নারী মোহনচাঁদকে নিজের বাড়ি নিয়ে গিয়ে চা খাওয়ানোর জন্য জোরাজুরিও করেছিলেন।” পুলিশ সূত্রে খবর, মোহনচাঁদ তদন্তকারীদের বলেছেন তিনি চা খেতে পারবেন না জানিয়ে যখন ওই নারীর সঙ্গে যখন হাত মিলিয়েছিলেন, তখন একটা হালকা টান অনুভব করেছিলেন আঙুলে। কিন্তু তখন কিছু খেয়াল করেননি। পরে যখন আংটি বেপাত্তা দেখেন, তখন বিষয়টি তাঁর মনে পড়ে।
তদন্তকারীরা বৃদ্ধ চিকিৎসকের বর্ণনা অনুযায়ী ওই নারীর কয়েকটি স্কেচও তৈরি করেছেন। মোহনচাঁদের বর্ণনা অনুযায়ী, নারী সুবেশা এবং সম্ভ্রান্ত। ইংরেজি ও বাংলা মিশিয়ে কথা বলছিলেন। সব মিলিয়ে মোহনচাঁদের সন্দেহের কোনও কারণ ছিল না।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮/মাহবুব