ছেলে কুলাঙ্গার হলেও মা-বাবার ভালবাসায় কমতি থাকে না। যে ছেলের ছোট হাত ধরে হাঁটতে শিখিয়েছিলেন বাবা, সেই বাবার গায়েই হাত তুলেছেন অশোকনগরের প্রদীপ বিশ্বাস। কিন্তু ছেলের মারের পরও একমাত্র ছেলেকে বিপাকে ফেলতে নারাজ বাবা। ছেলেকে ছাড়াতে আদালতে আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিলেন প্রহৃত মানিকলাল বিশ্বাস। বৃদ্ধের দাবি, আমি তো অন্যায় করেছি!
বুধবার ফেসবুকে ভাইরাল হয় একটি ভিডিও। সেই ভিডিওয় দেখা গেছে, বৃদ্ধ বাবার জামার কলার ধরে চড় মেরে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। দোষ, স্ত্রীর ডায়াবেটিস থাকা সত্ত্বেও মিষ্টি খাইয়েছেন মানিকলাল বিশ্বাস। সামান্য এই কারণেই বাবাকে মারধর করলেন 'গুণধর' ছেলে। সেই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরই ওঠে প্রতিবাদের ঝড়। পুলিশের কাছেও খবর দেন বহু মানুষ। এরপরই প্রদীপ বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কুলাঙ্গার ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস অশোকনগর পুরসভার কর বিভাগের কর্মী। বৃহস্পতিবার তাকে তোলা হয় বারাসত আদালতে। সেখানেই বাবার স্নেহ উপচে পড়ে ছেলের উপরে। আদালতে ছেলের জামিন চাইলেন খোদ বাবা। বললেন, একমাত্র ছেলে। ওকে ছাড়া চলবে না। এমনকি ছেলেকে জামিন না দিলে আত্মহত্যার হুমকিও দিলেন। পিতার এমন আর্তনাদের সাড়া দিলেন বিচারক। জামিনে মুক্তি পেলেন প্রদীপ বিশ্বাস।
মানিকলাল বিশ্বাস আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন, সন্তান কুলাঙ্গার হতে পারেন, কিন্তু কোন পিতা খারাপ হন না। প্রদীপ বিশ্বাস নিজের সাফাইয়ে বলেছেন, মা সুগার রোগী। তাকে জোর করে মিষ্টি খাইয়ে দিয়েছিলেন বাবা। তাই মাথা ঠিক রাখতে পারেননি। তা বলে বৃদ্ধকে মারবেন? জবাব তিনি ছিলেন নিরুত্তর।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর
