নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে সাম্প্রদায়িক লাইনে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানোর অভিযোগে ভারতের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে। আর এরপরই গর্জে উঠলেন মমতা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এক হাত দিয়ে মমতার বক্তব্য ‘প্রধানমন্ত্রী যে রোজ হিন্দু-মুসলিম করেন.. কই, তার বিরুদ্ধে কি একটাও অভিযোগ হয়েছে?
বৃহস্পতিবার হাওড়া জেলার ডোমজুড়ের সভা থেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘আমাকে দশটা শোকজ করলেও কিছু যায় আসে না। উত্তর আমার একই হবে। কোনো ভাগাভাগি হবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট দিন। হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিষ্টান কেউ ওদের ভোট দেবেন না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে কোনো লাভ নেই। নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে? তিনি যে রোজ হিন্দু-মুসলিম করেন।’
মমতা আরও বলেন, ‘যারা নন্দীগ্রামের মুসলিমদের পাকিস্তানি বলেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কয়টা অভিযোগ হয়েছে? লজ্জা করে না। গলায় দড়ি দিয়ে ওদের মরা উচিত। আর আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ছাই করবে। আমি হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিষ্টান, আদিবাসী সকলের সাথেই আছি। ওরা (বিজেপি) কি ভেবেছে?’
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল হুগলি জেলার তারকেশ্বরে এক নির্বাচনী জনসভা থেকে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, ‘আমি সংখ্যালঘু ভাই-বোনেদের কাছে হাতজোড় করে একটা কথা বলব। ওই শয়তান ছেলেটা যে বিজেপির টাকা নিয়ে বেরিয়েছে, ওর কথা শুনে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করবেন না। ও অনেক সাম্প্রদায়িক কথা বলে। ও হিন্দ-মুসলিমের মধ্যে সংঘর্ষ লাগায়। ও বিজেপির একটা সাগরেদ, বিজেপির একজন কমরেড। ও বিজেপির রুপি নিয়ে বেরিয়েছে যাতে সংখ্যালঘু ভোটটা ভাগ হয়ে যায়। ওকে আপনারা ভোটটা দেবেন না। বিজেপি আসলে আপনাদের সমূহ বিপদ এটা মাথায় রাখবেন।’ মমতা আরো বলেন ‘আমি হিন্দু ভাইদের বলব, বিজেপির কথা শুনে আপনারা একদম হিন্দু-মুসলিম করবেন না।’
নাম না করলেও মমতার নিশানা ছিল তারকেশ্বর বিধানসভার বিজেপির প্রার্থী রাজ্যসভার সাবেক সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত এবং নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। মমতার ওই মন্তব্যের পরই নির্বাচন কমিশনের কাছে নালিশ জানায় বিজেপি নেতা মুক্তার আব্বাস নাকভি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মমতা ব্যানার্জি তার দলের হয়ে প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক লাইনে ভোট চাইছেন।
এরপরই বুধবার কমিশনের তরফে চিঠি দিয়ে সাম্প্রদায়িক লাইনে ভোট চাওয়া নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর কাছে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। এজন্য আগামী ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে তাকে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই