দুর্ভোগের শেষ নেই মগবাজার-মৌচাক এলাকায়। রোদ হলে ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায় পুরো এলাকা। আর বৃষ্টি হলে হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায় সব রাস্তা। সড়কজুড়ে খানাখন্দ। সামান্য বৃষ্টিতেই ভেসে যায় রাস্তার এপাশ-ওপাশ। মালিবাগ থেকে মৌচাক রাস্তার কিছু অংশে নতুন করে ঢালাই দেওয়া হলেও বাকি অংশে ঢালাইয়ের কাজ আটকে আছে। ফুটপাতের বালাই নেই রাস্তার ডানে-বাঁয়ে। নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নির্মাণসামগ্রী ফেলে যত্রতত্র সৃষ্টি করা হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এর সঙ্গে হরহামেশা যুক্ত হচ্ছে রিকশার জট। ফলে মগবাজার-মৌচাক এলাকা এখন অনেকটাই পরিত্যক্ত। জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া কেউই যেতে চান না ওই পথে। এদিকে এ ফ্লাইওভারের সাতরাস্তা থেকে হলি ফ্যামিলি অংশ গত মার্চে খুলে দেওয়া হয়েছে। ইস্কাটন থেকে মৌচাক অংশ আগামী আগস্টে খুলে দেওয়া হবে। আর বাকি অংশের কাজ নির্দিষ্ট সময় ডিসেম্বরে শেষ করতে পারবে না নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। দফায় দফায় প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি আর সময়সীমা বাড়ানোয় ওই এলাকার দুর্ভোগ বেড়েছে অনেক গুণ। আগামী মার্চের আগে প্রকল্পের বাকি কাজ সমাপ্ত হবে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক নাজমুল আলম। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৭০ শতাংশ। পুরো কাজ শেষ হতে মার্চ পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। এ ছাড়া রয়েছে জায়গার সংকট। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিজ্ঞতার অভাবে কাঙ্ক্ষিত গতিতে প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে না বলে জানান তিনি। প্রকল্প এলাকায় শুধু যে পথচারীদেরই কষ্ট, তা নয়। এ এলাকায় রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ। রয়েছে একাধিক হাসপাতাল। ফলে হাসপাতালে যেতে চিকিৎসক-রোগী, রোগীর অভিভাবক কিংবা স্কুল-কলেজে যেতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা নিত্য দুর্ভোগ পোহালেও দেখার কেউ নেই। বৃষ্টি হলে এ দুর্ভোগ বেড়ে যায় অনেক গুণ। অতিরিক্ত দুর্ভোগ এড়াতে সদরঘাট থেকে মৌচাক হয়ে টঙ্গীগামী এবং সায়েদাবাদ থেকে মগবাজার হয়ে মিরপুরগামী একাধিক বাস তাদের রুটই পরিবর্তন করে ফেলেছে। এর মধ্যে রয়েছে লাব্বাইক পরিবহন, আয়াত পরিবহন ও সুপ্রভাত পরিবহন। জানা গেছে, এ প্রকল্পের ইস্কাটন বা বাংলামোটর-মৌচাক অংশের কাজ চলতি মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। এখনো প্রায় ২০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে এ অংশের। ফলে আগস্টের আগে শেষ হচ্ছে না এ অংশের কাজ। আর রামপুরা-মৌচাক হয়ে শান্তিনগর ও রাজারবাগ অংশ ডিসেম্বরে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এ অংশের কাজ এখনো ৭০ ভাগের কম শেষ হয়েছে। বর্তমানে বর্ষা মৌসুম চলায় নির্মাণকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা এলজিইডি। ফলে খোদ স্থানীয় সরকার বিভাগ বলছে, এ প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ করতে ২০১৭ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্য স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগকে জানিয়েছে, আগামী বছরের জুনের আগে শেষ করা সম্ভব হবে না কাজ। তবে সরকারের পরিকল্পনা ছিল চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি এটা না হয় তাহলে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকল্প ব্যয়ও আরেক দফা বাড়তে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০০৪ সালে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৪৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০১১ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। তৃতীয় ধাপে খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণ ব্যয়ও বাড়ছে। আবার সময়সীমা মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হলে ব্যয়ও আরেক দফা বাড়বে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। তিনটি অংশে বিভক্ত এই উড়ালসড়কের তেজগাঁও-হলি ফ্যামিলি পর্যন্ত ২ দশমিক ১০৫ কিলোমিটারের কাজ পায় নাভানা-সিমপ্লেক্স। ২৬ মার্চ এ অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলেও এফডিসি অংশের কাজ বাকি আছে। প্রথম নকশায় এফডিসির সামনের রেললাইনের আগে শেষ করার কথা ছিল। পরে এটি সোনারগাঁও পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘আমাদের নীতিনির্ধারকরা ভেবে কাজ করেন না। করে ভাবেন এবং জনগণের দুর্ভোগ বাড়ান।’ দ্বিতীয় অংশে রয়েছে ইস্কাটন থেকে মগবাজার হয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস পর্যন্ত। চীনা প্রতিষ্ঠান এমসিসি-এসইএল ইউডিসি এই অংশের কাজ পেলেও তাদের হয়ে বাস্তবায়ন করছে তমা কনস্ট্রাকশন। তৃতীয় অংশ শান্তিনগর-মৌচাক-মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার কার্যাদেশ পেয়েছে এমসিসি ও তমা কনস্ট্রাকশন যৌথভাবে। গতকাল মৌচাক-বাংলামোটর সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্র জঞ্জাল আর বিশৃঙ্খলা। উড়ালসড়কের পিলার নির্মাণের কাজ শেষ হলেও রাস্তায় পড়ে আছে নির্মাণসামগ্রী। এর মধ্যেই তৈরি হচ্ছে বিশাল বিশাল স্লাব। কোথাও রাস্তার এক পাশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার কোথাও দুই পাশে সরু গলির মতো জায়গা রাখা হয়েছে। রিকশা গেলেও বাস যেতে পারে না। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় পথচারী ও যাত্রীদের। এমন জঞ্জালের মধ্যেই চলছে, বাস-মিনিবাস-অটো, রিকশা, ভ্যানসহ নানা বাহন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি আর ঝুঁকি পায়ে হাঁটা মানুষের। একদিকে নেই কোনো ফুটপাথ। অন্যদিকে হয় ধুলাবালি, নাহয় কাদা-পানি। ফলে পায়ে হেঁটে চলা মানুষের দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।
শিরোনাম
- সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে খালেদা জিয়া
- সাদিয়া আয়মানের অভিনয়ে মুগ্ধ অনিরুদ্ধ রায়
- গাইবান্ধা কারাগারে অসুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
- আদাবরের শীর্ষ ছিনতাইকারী ‘চোরা রুবেল’ গ্রেপ্তার
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিভাগীয় শহরে বাস দিল জবি
- ভূমিকম্প অনিশ্চিত তাই বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগ নেই: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
- ঢাকা মেডিকেলে একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ
- বাগেরহাটে ৩ বান্ধবীকে শ্লীলতাহানি ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
- হাসিনা-কামালকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ কার্নিভাল-৩ অনুষ্ঠিত
- নভেম্বরের ২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৩ কোটি ডলার
- ফ্যাসিজম সহ্য করা হবে না, নিজেরাও ফ্যাসিষ্ট হবো না: তানিয়া রব
- বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
- ৮১ দেশি পর্যবেক্ষকের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৫ নভেম্বর
- ‘ফ্যামিলি ম্যান থ্রি’: মনোজ নয়, জয়দীপের সিজন?
- টিকটক ইউজারদের জন্য চালু হলো টাইম অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফিচার
- পটুয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
- বাংলাদেশের কাল ব্রুনাই চ্যালেঞ্জ