১৯৯০ সালের কথা। বাংলাদেশে তখনও পাঙ্গাশ মাছের চাষ শুরু হয়নি। ঠিক এ সময়েই চাঁদপুর মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মত্স্য বিজ্ঞানী ড. খলিলুর রহমানের কাছ থেকে ১২৮ পিস পাঙ্গাসের মা মাছ সংগ্রহ করেন যশোরের মত্স্যচাষি ফিরোজ খান। এরপর ৩-৪ বছর ধরে এই মা মাছগুলো থেকে রেণু উৎপাদনের চেষ্টা করেন তিনি। ৯৪ সালে সফলতা পান। ৩০ কেজি রেণু উৎপাদন করেন। যা থেকে ৩৮০০ পিস পোনা তৈরি হয়। এই পোনা থেকেই যে মা মাছগুলো তৈরি হয়, তা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। বাংলাদেশে পাঙ্গাস থেকে রেণু উৎপাদনের ঘটনা এটিই প্রথম। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, ১৯৯০ সালে দেশে চাষের মাছ উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার টন। ২০০০ সালে এই মাছের উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় ৬ লাখ ৫৭ হাজার টনে। আর ২০১৫ সালে দেশে চাষের মাছ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টন, যার একটি বড় অংশই হলো ফিরোজ খানের পাঙ্গাস। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, পাঙ্গাসের রেণু উৎপাদন করে ফিরোজ খান যেমন নিজের ভাগ্য বদলেছেন, দেশের মত্স্য সেক্টরে ভূমিকা রেখেছেন, তেমনি ভাগ্য বদলে দিয়েছেন যশোরসহ দেশের অসংখ্য বেকার তরুণ-যুবকের। তার হ্যাচারিতে এখন কেবল পাঙ্গাসই নয়। রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, থাই সরপুটি, কমন কার্প, মিরর কার্প, বাটা, বিগহেড, ভিয়েতনাম কই ও ভিয়েতনাম সইল মাছের রেণু উৎপাদন হচ্ছে। সম্প্রতি যশোর শহরের চাঁচড়া এলাকায় তার ‘মা ফাতেমা হ্যাচারি’তে বসে কথা হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে। তিনি জানান, তার হ্যাচারিতে বছরে ১০ হাজার কেজি রেণু উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু নানা কারণে এখন ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার কেজি রেণু উৎপাদন হচ্ছে। দেশে এখন যে পরিমাণ চাষের মাছ উৎপাদন হচ্ছে, তার জন্য যে পরিমাণ রেণু দরকার তার ৭০ ভাগই যশোরে উৎপাদিত হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে এখন রেণুর চাহিদা তিন লাখ কেজি। এরমধ্যে যশোরের ৩০টি হ্যাচারিতেই উৎপাদিত হয় ১ লাখ ৮০ হাজার কেজি রেণু। প্রাকৃতিক উৎস থেকে পাওয়া যায় মাত্র এক হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কেজি রেণু। ফিরোজ খান বলেন, বিপুল পরিমাণ চাষের মাছ উৎপাদন করে মত্স্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে চতুর্থ স্থান দখল করেছে। যশোরের রেণু উৎপাদনকারীদের বাদ দিয়ে এই সাফল্য কোনো ভাবেই সম্ভব ছিল না। দেশের মত্স্য সেক্টরে অসামান্য অবদান রাখা ফিরোজ খান ব্যক্তিগত জীবনেও সফলতার নজির সৃষ্টি করেছেন। তার একমাত্র ছেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছেন। তিন মেয়ের মধ্যে এক মেয়ে বিবিএ পাস করেছেন। এক মেয়ে ফার্মাসিস্ট, থাকেন নিউজিল্যান্ডে, আরেক মেয়ে মেডিকেল চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। এখন দেশের প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু করতে চান ফিরোজ খান। তার স্বপ্ন, দেশের প্রতিবন্ধীদের মত্স্য চাষে প্রশিক্ষিত করে তাদের স্বাবলম্বী করবেন। এরইমধ্যে যশোর শহরে একটি বাড়ি ভাড়া করে ১৫ প্রতিবন্ধীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন তিনি। এখন এ উদ্যোগকে তিনি অনেক দূর নিয়ে যেতে চান।
শিরোনাম
- পাবনায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩
- চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ২
- আবুধাবিতে সাড়ে ৮৩ কোটি টাকার লটারি জিতলেন প্রবাসী বাংলাদেশি
- দৈনিক কোটি টাকার চাঁদাবাজি
- আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি বেড়েছে ২১০০ কোটি টাকা
- এবার নির্বাচনে সেনাবাহিনীই ভরসা
- পিআর : দেশ কতটা প্রস্তুত
- বাবার হাত ছেড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে গাড়িচাপায় সন্তানের মৃত্যু
- বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এসিড নিক্ষেপ, দুই নারী ও শিশু দগ্ধ
- এনএসডিএ'র নির্বাহী চেয়ারম্যান হলেন রেহানা পারভীন
- নারী পাচারে টোপ ‘ভালো চাকরি’
- মুগদায় ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনি, হাসপাতালে তরুণের মৃত্যু
- মাতুয়াইলে ১০ তলার ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু
- জুলাইয়ের বিপ্লবী ছাত্র-জনতা মব নয় : মাহফুজ আলম
- জাপানে ভূমিকম্পের মধ্যে সমুদ্রে ‘অদ্ভুত গর্জন’ শোনার দাবি
- ফ্যাসিস্টদের পুশইন করুন, বিচার করতে প্রস্তুত আমরা : নাহিদ
- শাকিবের আগামী ঈদের সিনেমা চূড়ান্ত
- এবার ‘ট্রাম্প সুগন্ধি’ বাজারে, বিতর্ক
- মহাসড়কে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৮ ডাকাত গ্রেফতার
- পারমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত ইরানের
কৃষি সংবাদ
পাঙ্গাশ চাষে ভাগ্য বদল
সাইফুল ইসলাম, যশোর
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর