ইকবাল পারভেজ। তিনি ছিলেন রাজউকের একজন সহকারী পরিচালক। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় সেখানে কাজ করেছেন। এর আগে ছিলেন সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খানের সহকারী আইন কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিমন্ত্রীর দাপটে বয়স জালিয়াতি করে তিনি এ পদে যোগ দেন। প্রতিমন্ত্রীর ছত্রচ্ছায়ায় থেকে ক্ষমতাধর হয়ে ওঠা ইকবাল পারভেজের ভয়ে রাজউকের পরিচালক এবং খোদ চেয়ারম্যানসহ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারাও থাকতেন তটস্থ। গুলশান, বনানী ও মতিঝিলে রাজউকের সরকারি পরিত্যক্ত সম্পত্তির ফাইল গায়েব করতেন পারভেজ। পরে ভুয়া মালিক সাজিয়ে ওই সম্পত্তি বিক্রি করতেন তিনি। তার নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে জালিয়াতির এক ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেট। আর এভাবেই জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আঙুল ফুলে কলা গাছে পরিণত হন দরিদ্র পরিবারের সন্তান ইকবাল পারভেজ। সংশ্লিষ্টদের মতে, হঠাৎ তার এই ভাগ্য পরিবর্তন যেন আলাদিনের চেরাগকেও হার মানিয়েছে। তার অবৈধ আয়ের টাকার ভাগ যেত সাবেক ওই প্রতিমন্ত্রীর পকেটে। সূত্রমতে, রাজউকের দায়িত্বশীল পদে চাকরি করেও ইকবাল পারভেজ ঠিকাদারি করেছেন। তিনি প্রতিমন্ত্রীর ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে শেষ দুই বছরেই গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর-অধিদফতরের ২৫টি ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নেন। নিজের গড়ে তোলা মেসার্স ইকবাল পারভেজ, মেসার্স ঊষা ট্রেডার্স ও মেসার্স তহমিনা ট্রেডার্সের নামে হাতিয়ে নেন আট কোটি টাকার টেন্ডার কাজ। ইকবাল পারভেজের ঠিকাদারি ফার্মগুলো কোনো টেন্ডারে অংশ নিলে সেই কাজ অন্য কেউ আর পেত না। ইকবালের কথাই ঠিকাদারি কাজ পাওয়ার ব্যাপারে শেষ কথা ছিল। সূত্র জানায়, প্রতিমন্ত্রীর সরাসরি সহযোগিতায় ইকবাল পারভেজ শুধু ঠিকাদারি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ভুক্ত পাঁচটি বিভাগ থেকে চার শতাধিক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টেন্ডারে পাওয়া ঠিকাদারি কাজগুলো না করেও তিনি কয়েক শ’ কোটি টাকার বিল তুলে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মাত্র তিন-চার বছরের ব্যবধানেই চক্রের তিন সদস্য একাধিক বাড়ি, গাড়ি, প্লটের মালিক হন। জানা যায়, মন্ত্রণালয়ে ইকবাল পারভেজের কোনো পদ না থাকার পরও তিনি সহকারী পরিচালক (আইন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরপর ইকবাল পারভেজকে তার মূল নিয়োগস্থল রাজউকের সহকারী পরিচালক পদে ফেরত পাঠানো হয়। তিনি মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতরগুলোয় নানা বেআইনি কাজ করে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন। বিভিন্ন জালিয়াত চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ ও ঘুষ লেনদেনে মুখ্য ভূমিকা পালন করাই ছিল তার কাজ। সরকারের শেষ মুহূর্তে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ঘিরে যে আখেরি লুটপাট চলে, এর মূল ঘটকের ভূমিকায়ও ছিলেন ইকবাল পারভেজ। জানা গেছে, পূর্বাচল প্রকল্পে যে ১৬৮টি আদিবাসী-ক্ষতিগ্রস্ত প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়, তাতে অন্তত ২০ কোটি টাকার বাণিজ্য করে পকেটস্থ করেন তিনি। প্রতিটি প্লটের বিপরীতে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়েছে। শুধু প্লট বরাদ্দ বা টেন্ডার বাণিজ্যই নয়, শেষ মুহূর্তে আবাসন প্রকল্প অবৈধভাবে অনুমোদন নিয়েও বড় ধরনের বাণিজ্য হয় মন্ত্রণালয় ও রাজউকে। রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় আর কে মিশন রোডে ২৪ তলা ভবনসহ সরকারের কয়েক শ’ কোটি টাকা মূল্যের জমি হাতছাড়া হওয়ার পেছনেও ইকবাল পারভেজের ৫০ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিতর্কিত ওই কর্মকর্তার মোটা অঙ্কের ঘুষ পকেটস্থ করার কারণেই সরকারকে এত বড় মাশুল দিতে হয়। ১৯৮১ সালের একটি ভুয়া চিঠিকে জায়েজ করার মাধ্যমে ১৫ শতক সরকারি জমি ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন ইকবাল পারভেজ। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক (আইন) পদ ব্যবহার করেই তিনি এ অপকর্মটি সাধন করেন বলে চাউর আছে। লুটপাটের কয়েক কোটি টাকা খরচ করে রাজধানীর কদমতলীতে ইকবাল পারভেজ আলিশান বাড়িও নির্মাণ করেছেন। কদমতলীর রায়েরবাগ মহল্লার সি ব্লকের ১৩৬২ নম্বর হোল্ডিংয়ের ঠিক বিপরীত পাশে সাত তলার বিশাল একটি অট্টালিকা গড়ে তুলেছেন তিনি।
শিরোনাম
- শান্তি প্রস্তাব মেনে নিতে ইউক্রেনকে সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প
- মামদানিকে ট্রাম্পের অভিনন্দন, বৈঠককে বললেন ‘দারুণ ও ফলপ্রসূ’
- ফাইনালে পাকিস্তানকে পেল বাংলাদেশ
- ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০
- বিএনপির রাজনীতিতে সব ধর্মের প্রতি সম্মান আছে : এ্যানী
- আমরা কোন রাজনীতির কথা ভাবছি
- রাজধানীতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন, পুড়ল দোকান
- ঢাকায় ভূমিকম্পে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সমবেদনা
- ভূমিকম্পে ঢাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের তালিকা প্রকাশ
- নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভূমিকম্পে শিশুর মৃত্যু, আহত ২৪
- যাত্রাবাড়ীতে নবীউল্লাহ নবীর গণসংযোগ
- রাজধানীতে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি
- ‘তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হাসিনার বিচার হয়েছে, তবে আপিলের সুযোগ আছে’
- পোস্টাল ভোটিং: দুই দিনে সাড়ে ৬ হাজার নিবন্ধন
- একসঙ্গে সহকারী অধ্যাপক হলেন ১৮৭০ শিক্ষক
- হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সতর্কবার্তা
- ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী জেলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে
- রাজশাহীতে বদ্ধ ঘর থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- ‘ঢাকার পুরনো ভবনগুলোর ৯০ শতাংশ বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মিত’
- ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০
সরকারি জমি বিক্রি টেন্ডারবাজি সব কিছুতে রাজউকের ইকবাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর