শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নগরীতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলকে ঘিরে গোটা রাজধানী এখন নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশে চারস্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্মেলনে দেশি-বিদেশি অতিথিরা থাকবেন, তাদের এবং সম্মেলনের নিরাপত্তায় সোয়াত টিমসহ অতিরিক্ত ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্যানে নিরাপত্তার নির্দেশনা দেবে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)।  পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক গতকাল বলেছেন, সোহরাওয়ার্দীসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য ছাড়াও কাউন্সিলের নিরাপত্তায় যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবকরা একসঙ্গে কাজ করে নিরবচ্ছিন্ন এবং সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করছেন। কাউন্সিলের জন্য রাজধানীর কয়েকটি সড়ক বন্ধ থাকতে পারে। এ জন্য ডিএমপি কমিশনার নগরবাসীর সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। গতকাল বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাউন্সিলের মঞ্চ ও এর আশপাশের স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের আইজিপি আরও বলেন, শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরায় সম্মেলনস্থল পর্যবেক্ষণ করা হবে। প্রতিটি গেটে পুলিশি তল্লাশি হবে। ‘উদ্যানের ভিতরে দলীয় কোন্দলের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে পুলিশ কী ব্যবস্থা নেবে’—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল। আমার বিশ্বাস এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে না। তবে এমন কিছু হলে দলটির নিজস্ব ডিসিপ্লিনারি কমিটি ব্যবস্থা নেবে। এর আগে আইজিপি সমাবেশস্থল ও মঞ্চ ঘুরে দেখেন। এ সময় পুলিশের ক্যানাইন (ডগ স্কোয়াড), বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট এবং সোয়াত টিম উপস্থিত ছিল। সম্মেলনকে ঘিরে রাজধানীজুড়ে ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও প্রতিটি গেটে পুলিশি তল্লাশি করা হবে। ডিএমপি কমিশনারসহ পলিশের ঊর্ধ্বতনরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করবেন। পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, গতকাল সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। 

সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কন্ট্রোল রুম : সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোর ফুটেজ পর্যবেক্ষণের জন্য রয়েছে তিনটি কন্ট্রোলরুম। এ ছাড়া রয়েছে তিন আইটি এক্সপার্ট।

সাতটি আর্চওয়ে গেট : সোহরাওয়ার্দী  উদ্যানে প্রবেশের জন্য সাতটি প্রবেশ মুখেই আর্চওয়ে গেট স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে আগতদের দেহ তল্লাশি করবেন। উদ্যানে শিখা চিরন্তনের গেট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ ভিভিআইপি ও ভিআইপিরা গাড়িসহ প্রবেশ করবেন। এ ছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের গেট দিয়ে বিভিন্ন জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা গাড়ি রেখে প্রবেশ করবেন। তাদের জন্য বিমানবন্দরের মতো শ্যাটল বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব বাসযোগে তাদের গেট থেকে মঞ্চে নেওয়া হবে। সোয়াত ও ডগ স্কোয়াড : কাউন্সিলের নিরাপত্তায় ডিএমপির পুলিশ ছাড়াও পুলিশের বিশেষায়িত সোয়াত টিম, স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে। 

ব্যাগ-অস্ত্র বহনে নিষেধাজ্ঞা : উদ্যানে যে কোনো ধরনের ব্যাগ, পোঁটলা, ধারালো অস্ত্র, দাহ্যপদার্থ ও লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়েও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

রাজধানীর সড়কে তল্লাশি : গতকাল থেকেই রাজধানীর সড়কগুলোতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। সন্দেহ হলেই পথচারীদের দেহ তল্লাশি করা হয়। আজ-কালও এমন তল্লাশি চালানো হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর