বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
চার জেলায় হত্যা মামলার রায়

সাতজনের ফাঁসির আদেশ, দুজনের যাবজ্জীবন

প্রতিদিন ডেস্ক

হত্যার দায়ে গতকাল চার জেলায় সাতজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে রংপুরে চার, বগুড়ায় দুই ও বরিশালে একজন। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুরে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রংপুর থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, রংপুরে চার বছর আগে এক স্টুডিও ব্যবসায়ীকে হত্যার পর মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় চার ছিনতাইকারীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবু  জাফর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফারুক মোহাম্মদ রেয়াজুল করিম জানিয়েছেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন পীরগাছা উপজেলার বড়পানসিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (৩৩), জুয়েল (২৬), সুজন মিয়া (২৫) ও বগুড়ার শাহিন মিয়া (২৫)। এ ছাড়া আদালত অন্য আসামি আলম মিয়াকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে। জরিমানা দিতে না পারলে তাকে আরও এক বছর দণ্ড ভোগ করতে হবে। দণ্ডিতদের মধ্যে একমাত্র সিরাজুল ইসলাম ছাড়া অন্যরা পলাতক রয়েছেন। বগুড়া থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, কাহালুর স্কুলছাত্র নাঈম হত্যা মামলার রায়ে দুজনের ফাঁসি ও একজনের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ১ লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল বিকালে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কাহালুর উলট্ট গ্রামের ভাটা মান্নানের পুত্র জাকারিয়া ও মোহাম্মাদ আলীর পুত্র ডালিম। সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হয়েছেন কাহালুর একই গ্রামের আহমেদ আলীর পুত্র আবদুল মতিন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা পলাতক। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নাঈমুল ইসলাম নাঈমকে (১৩) মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করার পর শ্বাসরোধে হত্যা করে ইটভাটার আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

বরিশাল থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, বরিশাল নগরীর কাশীপুরে বোনকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ভাই আল আমিনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে বখাটে মাদ্রাসাছাত্র মাহমুদ হাসান হাফিজকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া ওই মামলার অন্য পাঁচ আসামি মাদ্রাসাছাত্রকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিকালে বরিশালের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রকিবুল ইসলাম অভিযুক্তসহ তিন আসামির অনুপস্থিতিতে এবং অন্য তিনজনের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। একমাত্র অভিযুক্ত মাহমুদ হাসান হাফিজ ঝালকাঠির গুয়াটন এলাকার মাওলানা আবদুস সোবাহানের ছেলে এবং নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের এন এস আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ছিল। সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) দেলোয়ার হোসেন দিলু জানান, বখাটে মাহমুদ হাসান হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী আল আমিনের দুই বোনকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে হাফিজ ও আল আমিনের মধ্যে বিরোধ হয়। এর জেরে আসামিরা ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর দিনদুপুরে আল আমিনকে জবাই করে হত্যা করে।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী ওসমান গনি ও নিহতের বোন তাছলিমা বেগম রুমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. আবুল কাশেম চৌধুরী এ রায় দেন। ২০০৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে ওসমান গনি তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম লিপিকে (৩৫) হত্যা করা হয়েছিল। নিহত ফেরদৌসী নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার গনিপুর গ্রামের ডা. মো. মমিন উল্লাহর মেয়ে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের শ্যামপুর গ্রামের হাবিব উল্লার ছেলে ওসমান গনি তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম লিপিকে শ্বাসরোধে হত্যার পর বাড়ির পুকুরে ফেলে দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টের (পিপি) জসিম উদ্দিন জানান, স্ত্রী হত্যার দায়ে ওসমান গনির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করায় তার শ্যালিকা তাছলিমা বেগম রুমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর