শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

চরের জমিতে একাধিক ফসল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের রৌমারীর চরাঞ্চলের কৃষিজমিতে একই সঙ্গে পাঁচ প্রকার ফসল চাষে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এ অঞ্চলের ৮৫ ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। খরা-বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করে মাটি চষে এ অঞ্চলের মানুষ বেঁচে থাকে। প্রতি বছর বন্যার ভয়াবহতায় ভারতের পাহাড়ি ঢল, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বালি ও পলিমাটি বন্যার সঙ্গে জমিতে এসে পড়ায় এখানকার ভূমি অধিকাংশ অসমতল। তাই ভূমির প্রকারভেদে এখানে ফসল চাষে পার্থক্য দেখা যায়। সারা দেশে কৃষিতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটলেও রৌমারীতে অনেকটা ব্যতিক্রম। সারা দেশে যখন কৃষিতে বিপ্লব ঘটছে তখন এখানকার কৃষকও হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকেননি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফসলের জমিতে একই সঙ্গে সাত ধরনের ফসল চাষে সাফল্য অর্জন করছেন। সমতল ভূমিতে ইরি-বোরো চাষ করা হলেও অসমতল ও বেলে মাটিতে চাষ করা হচ্ছে রবিশস্য। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সোনাপুর, ঘুঘুমারী, চরফলুয়ারচর, চরবাঘমারা, চরগয়টাপাড়া, চরলাঠিয়াল ডাঙ্গায় অর্ধশত একর জমিতে চাষ করা হয়েছে সাতমিশালি ফসল। লাঠিয়াল ডাঙ্গার মনোহার, শরিফ উদ্দিন, বিয়াজল ও ইজ্জত আলী জানান, তাদের চরাঞ্চলের জমি অসমতল ও বালির পরিমাণ বেশি হওয়ায় ইরি-বোরোর পরিবর্তে একই জমিতে একই সঙ্গে ছয়-সাত প্রকার ফসল চাষে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। শুরুতেই আখ চাষের জন্য জমি তৈরি করেন। পরে ওই জমিতে প্লট করে লাল শাক, পাট, কলমি শাক চাষ করেন। এসব সবজি রোপণের ১৫ দিন পর সারিবদ্ধভাবে বাদাম, মরিচ, ঢেঁড়স ও পুঁই শাকের বীজ বপন করেন। এক মাসের মধ্যে সবজি বাজারে বিক্রি করা হয়। পরে বাকি সাতটি ফসলের মধ্যে বাদাম, বেগুন, মরিচ, ঢেঁড়স ও পুঁই শাক মাসাধিক সময় ধরে বাজারজাত করে প্রচুর অর্থ আয় করেন। অবশিষ্ট থেকে যায় আখ। আখের গাছ উপযুক্ত হওয়ার আগেই বাদাম ও সবজি জাতীয় ফসল উঠে যায়। আখ খেতে এসব সবজি চাষ করায় জমির পরিচর্যা ভালো হয়। ফলে আখের ফলনও হয় বেশি। কঠোর পরিশ্রমে একই জমিতে বহু ফসল চাষে তারা ব্যাপক লাভবান হয়েছেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর