শনিবার, ৪ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিলেট মাতালো সংস্কৃতি উৎসব

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেট মাতালো সংস্কৃতি উৎসব

নাচ, গান, লোকগান, চলচ্চিত্র, বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শনী, কারুশিল্প, নাটক, সাহিত্য সম্মেলন, স্থাপত্য প্রদর্শনী— এসব মিলিয়ে জাঁকজমকপূর্ণভাবে বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসব মাতিয়ে ছিল সিলেট। গত ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া দশ দিনব্যাপী এ উৎসব শেষ হয়েছে গতকাল। বাঙালি সংস্কৃতির নানা কৌণিক দিক প্রতিফলিত করার প্রয়াসে ‘মানবিক সাধনায়’ স্লোগানে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের এ সংস্কৃতি উৎসব ছিল সিলেটের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সাংস্কৃতিক আয়োজন।

সিলেট নগরীর আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে বসেছিল বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসব। শুরু থেকেই এ উৎসবকে ঘিরে সিলেটের সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের মধ্যে ছিল অন্যরকম এক আগ্রহ। উৎসব শুরু হওয়ার পর যার প্রকাশ ঘটে উপচে পড়া ভিড়ে। উৎসবে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটেছে। দর্শনার্থীদের সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষকে। সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা বলছেন, সিলেটে এ ধরনের বৃহৎ পরিসরের আয়োজন এই প্রথম। এত আয়োজন নিয়ে, এত বর্ণাঢ্যতা নিয়ে এর আগে এ ধরনের সংস্কৃতি উৎসব সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়নি। এ জন্য এ উৎসবকে ঘিরে ছিল মানুষের ব্যাপক উচ্ছ্বাস। সুবীর নন্দী, অদিতি মহসিন, চন্দনা মজুমদার, জলের গান, কুদ্দুস বয়াতি, শফি মণ্ডল, কৃষ্ণকলিসহ বাংলাদেশের তিন শতাধিক সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী, চিত্রকর, নাট্যকুশলী, লেখক ও কবির অংশগ্রহণ ছিল এ উৎসবে। এ ছাড়া ভারতের হৈমন্তী শুক্লা, শ্রীকান্ত আচার্য্য, মনোময় ভট্টাচার্য্য, জয়তী চক্রবর্তী ও পার্বতী বাউলও ছিলেন। উৎসবে মেঘমল্লার, অনিল বাগচীর একদিন, রানওয়ে, তিতাস একটি নদীর নাম, টেলিভিশন, গেরিলা, আন্ডার কনস্ট্রাকশন প্রভৃতি ছবি এবং নন্দিত মঞ্চনাটক মহাজনের নাও, আমেনা সুন্দরী, কঞ্জুস এবং কহে বীরাঙ্গনা প্রদর্শিত হয়। বৃহৎ এই সংস্কৃতি উৎসব জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাকের নামে উৎসর্গ করা হয়েছিল। উৎসব চলাকালে সাহিত্য সম্মেলনে খ্যাতিমান সাহিত্যিকদের মিলনমেলা বসেছিল। এ ছাড়া ছিল দেশের প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রদর্শন, বইমেলা, সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ঝুমুর, ধামাইল, সুফি ও সাধনসংগীত, চা জনগোষ্ঠী, মনিপুরী ইত্যাদি আঞ্চলিক গান ও নাচ। এ ধরনের বৃহৎ আয়োজন সিলেটের সংস্কৃতি অঙ্গনকে আরও গতিশীল করবে বলে মন্তব্য অভিজ্ঞজনদের। সম্মিতিল নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু বলেন, ‘সংস্কৃতির এত বিশাল আয়োজন এর আগে সিলেটে কখনই হয়নি। সিলেটকে, সিলেটের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য এটি একটি বড় সুযোগ ছিল। এ আয়োজন থেকে ভবিষ্যতে সিলেটের সংস্কৃতি আরও গতিশীল হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর