রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

চলে গেলেন মিজারুল কায়েস

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

চলে গেলেন মিজারুল কায়েস

ব্রাজিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে থাকা সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস গতকাল ভোরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শ্বাসকষ্ট ও রক্তে ইনফেকশনজনিত রোগে প্রায় এক মাস ব্রাজিলের হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন ৫৭ বছর বয়সের এ পেশাদার  কূটনীতিক। পররাষ্ট্র ক্যাডারের ’৮২ ব্যাচের এ কর্মকর্তা চলতি বছরের শেষ নাগাদ অবসরে  যেতেন। মিজারুল কায়েসের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রমুখ। শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে ব্রাজিল সরকার এবং ঢাকায় ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত ক্যামপোস নোবোরগে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিজারুল কায়েস স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৬টা) ইন্তেকাল করেন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও রক্তে ইনফেকশনের মতো প্রাণঘাতী সেপটেসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এর আগে ২০১২ সালে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে খানিকটা সুস্থ হয়েছিলেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ব্রাজিলের সাও পাওলোতে পৌঁছার পর থেকেই মিজারুল কায়েসের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। চেকআপে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি ভর্তি না হয়ে শ্বাসকষ্ট নিয়েই সাও পাওলো থেকে সড়কপথে ব্রাসিলিয়া পৌঁছান। এতে তার অসুস্থতা আরও বেড়ে যায়। পরে তাকে হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দীর্ঘ কূটনৈতিক ক্যারিয়ারে মিজারুল কায়েস বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। মালদ্বীপ ও রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনের পর ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্টে পড়াশোনা করা মিজারুল কায়েস কূটনীতিকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটেও পড়িয়েছিলেন। শিল্পকলার একজন সমঝদার ব্যক্তি মিজারুল কায়েস ঢাকায় বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও চিত্র প্রদর্শনীতে বিচারকের ভূমিকা পালন করেছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সদস্য থাকা মিজারুল কায়েস বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কিশোরগঞ্জের সন্তান মিজারুল কায়েস স্ত্রী, দুই মেয়ে ও বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর