সোমবার, ১৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথি জলপরী

মোস্তফা কাজল

চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথি জলপরী

জাতীয় চিড়িয়াখানার বাসিন্দা আফ্রিকান জলহস্তী জলসুন্দরী পরিবারে জন্ম নিয়েছে নতুন অতিথি। নাম রাখা হয়েছে জলপরী। গতকাল ভোরে দুর্লভ প্রাণী জলসুন্দরী জন্ম দিয়েছে একটি বাচ্চা। এবারও আবদ্ধ অবস্থায় জন্ম নিল মিরপুরের চিড়িয়াখানায়। ঢাকার চিড়িয়াখানার বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী মা জলহস্তীর জন্ম হয়েছিল কেনিয়াতে।

১৯৯১ সালের জুলাই মাসে কেনিয়া সরকার বাংলাদেশকে দান করেছিল এ জলহস্তিটি। বর্তমান বয়স ৩৫ বছর। এই প্রাণীর গড় আয়ুষ্কাল ৩২ থেকে ৩৫ বছর। কিন্তু আবদ্ধ অবস্থায় খাঁচায় বা বেষ্টনীতে ২৮ থেকে ৩০ বছর বেঁচে থাকে। চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, আবদ্ধ অবস্থায় এ প্রাণী বাচ্চার জন্ম দেয় না। কিন্তু জাতীয় চিড়িয়াখানায় এমন ধরনের প্রাণী বাচ্চার জন্ম দেওয়ায় নতুন ইতিহাসের জন্ম দিল জলহস্তি। বর্তমানে জলহস্তির আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। গতকাল সকাল ১১টায় চিড়িয়াখানার জলহস্তির বেষ্টনীতে গিয়ে দেখা গেছে, বাচ্চা নিয়ে খুশিতে আটখানা কেনিয়ার এই দুর্লভ প্রাণীটি। দুপুর ১২ টায় বৃহৎ প্রাণী শাখার (তৃণভোজী) জু অফিসার গিয়ে ঘাস ও দানাদার খাবার খেতে দেয়। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ১২টি জলহস্তি রয়েছে। খাবার খেয়ে বেষ্টনীর ভিতর ও পুকুরে নেমে জলকেলি শুরু করে। এসব দেখে বেশ আনন্দ পায় চিড়িয়াখানায় আসা অগণিত দর্শক। বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর কমপক্ষে ৩০ দিন মা তার বাচ্চাকে সারাক্ষণ আগলে রাখে। এছাড়া বাচ্চাকে নিয়ে যেন জলহস্তি পরিবারের আন্দনের সীমা নেই। জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, এক সময় জলহস্তিটি বেষ্টনীর মধ্যে দৌড়-ঝাঁপ করত। পুকুরে নেমে থাকত। মানুষ দেখলে তেড়ে আসত। এখন বাচ্চা পেয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত। চারদিকে তার সতর্ক চাহনি। অপরিচিত কেউ আসতে দেখলে আগলে রাখে বাচ্চাকে। তিনি জানান, আফ্রিকার নদ ও হ্রদে পাওয়া যায় জলহস্তি। দেড় থেকে আড়াই টন ওজনের দেহ। স্থূল নরম এদের শরীর। লোমবিহীন শরীর এবং পাগুলো শরীরের তুলনায় বেশ ছোট। উচ্চতা দেড় মিটার থেকে চার মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বিরাট মুখে বড় বড় দুটি দাঁত দেখা যায়। ভালো সাতারু এবং বেশির ভাগ সময় পানিতে কাটায়। খাবারের সময় ডাঙ্গায় উঠে আসে। জলহস্তি তৃণভোজী প্রাণী। সবুজ ঘাস, শাকসবজি এদের প্রধান খাদ্য। আট মাস গর্ভধারণের পর একটি করে বাচ্চার জন্ম দেয়। শিশুরাই জলহস্তির সবচেয়ে বেশি ভক্ত। নতুন অতিথিকে দেখতে ভিড় হয় বেষ্টনীর সামনে। দুর্লভ এ জলহস্তিকে ঐতিহ্য বলে মনে করছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ খবর