বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফারমার্স ব্যাংকের মূলধন জোগানে সিদ্ধান্ত হয়নি

বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি খাতের ফারমার্স ব্যাংকের মূলধন জোগান দেওয়া হবে কোন প্রক্রিয়ায় এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান মজিব উদ্দিন আহমেদ। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীরের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের পর্ষদ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আইসিবি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ফারমার্স ব্যাংককে কীভাবে  সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। ব্যাংকের অবস্থা এবং আমরা কীভাবে অংশগ্রহণ করতে পারি আজ (গতকাল) সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা রেসকিউ করছি। ব্যাংকটিকে আমরা ধ্বংস হয়ে যেতে দিতে পারি না। ব্যাংকটি যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখনো আইসিবি পাশে ছিল। তবে সে সময় আমাদের অংশগ্রহণ ছিল খুবই অল্প। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আইসিবির কোনো সদস্যও তখন ছিল না। যে ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থা নেই সেখানে অর্থ দিয়ে আস্থা ফেরানো যাবে কিনা— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আস্থা নেই এটা ঠিক না। আস্থা ইতিমধ্যে ফিরে আসছে। আমরা হয়তো তাদেরকে সহায়তা করব, এটা সবাই জানে। সাম্প্রতিক ডাটা (তথ্য) নিলে দেখা যাবে মানুষ ডিপোজিট দিচ্ছে, ব্যাংক ঋণ রিকোভারি করছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। ফারমার্স ব্যাংকের সংকট উত্তোরণে এক হাজার ১০০ কোটি টাকার মূলধন জোগান দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংক এবং একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে আইসিবি একাই জোগান দেবে ৪৫০ কোটি টাকা। বাকি টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বিভিন্ন অঙ্কে মূলধন হিসেবে জোগান দেবে। কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় দেওয়া হবে সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ফারমার্স ব্যাংককে মূলধন জোগান দেওয়া হলে কত টাকা দেওয়া হবে এবং এর বিনিময়ে আইসিবি ব্যাংকটির পর্ষদের থাকবে কিনা— এমন প্রশ্নের উত্তরে মজিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, ফারমার্স ব্যাংককে মূলধন জোগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছু বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে। তবে কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। এটি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ফারমার্স ব্যাংক আইসিবি থেকে বিনিয়োগ হিসেবে মূলধন নিতে আগ্রহী হলেও সোনালী, জনতা, রূপালী বা অগ্রণী ব্যাংক থেকে অর্থ মূলধন হিসেবে না নিয়ে ঋণ হিসেবে পেতে চায়। তবে ব্যাংকগুলো তাতে রাজি নয়।

ব্যাংকগুলো চায় মূলধন হিসেবে অর্থ নিয়ে ফারমার্স ব্যাংক পরিচালনায় তাদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে। শুধু তাই নয়, বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতের নিশ্চয়তাও চায় ব্যাংকগুলো। কেননা এসব ব্যাংক ফারমার্স ব্যাংকে যা বিনিয়োগ করবে তা তো মূলত গ্রাহকদেরই টাকা। অর্থাৎ আমানতকারীদের অর্থ কোথাও বিনিয়োগ করলে তা ফেরতের নিশ্চয়তাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে এসব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক।

সর্বশেষ খবর