বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

তুরাগ তীরের ২৯ স্থাপনা উচ্ছেদ

কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার চারপাশের নদী দখলমুক্ত করতে ফের অভিযানে নেমেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। গতকাল তৃতীয় পর্বের প্রথম দিনের (২৫তম কার্যদিবস) অভিযানে সাভার থানাধীন বিরুলিয়া এলাকার বড়কাঁকর ও দেউন মৌজায় তুরাগ তীরের ২৯ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া অবৈধভাবে নদের জায়গা দখলের অভিযোগে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম-পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু করে বিকাল পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চলে। এ সময় দুটি একতলা পাকা বাড়ি, ১১টি আধা পাকা বাড়ি, চারটি পাকা বাউন্ডারি ওয়াল, ১০টি টিনের ঘর ও দুটি পার্ক উচ্ছেদ করা হয়। এতে তুরাগ তীরের ২ একর ভূমি অবমুক্ত হয়। উচ্ছেদকৃত বিভিন্ন সামগ্রী এক কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকায় নিলাম করা হয়েছে। এর আগে, প্রথম দুই পর্বের ২৪ দিনের অভিযানে প্রায় তিন হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

এদিকে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সব স্থাপনা অবিলম্বে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বন্দর চেয়ারম্যানকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে আদেশে। গতকাল এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

 পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাশে (এইচআরপিবির) পক্ষে আমরা একটা আবেদন করেছিলাম। শুনানিতে আমরা প্রার্থনা করেছিলাম যে, আগে যে আদেশ দেওয়া হয়েছিল সেখানে ডেপুটি কমিশনারসহ আরও পাঁচ বিবাদীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য। কিন্তু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘এখন যে জায়গাগুলোতে অবৈধ স্থাপনা আছে সে জায়গাগুলো মূলত বন্দরের। এ জন্য আমরা একটি নির্দেশ প্রার্থনা করেছিলাম, বন্দরের চেয়ারম্যানকে একটা নির্দেশ দেওয়ার জন্য। দীর্ঘ শুনানি শেষে বন্দরের চেয়ারম্যান ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে সেগুলো জরিপ প্রতিবেদন ও আরএস অনুসারে উচ্ছেদ করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে আদালত।’ এ বিষয়ে আগামী ১৯ মে পরবর্তী শুনানির দিন রাখা হয়েছে বলে জানান এ আইনজীবী।

২০১০ সালে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধ দখল সংক্রান্ত প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরে প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ জনস্বার্থে হাই কোর্টে রিট করে। রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৬ অগাস্ট আদালত কর্ণফুলী নদীর তীরে থাকা দুই হাজার ১৮৭টি অবৈধ স্থাপনা সরানোর পাশাপাশি ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয় হাই কোর্ট।

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ দিন নগরীর সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে ২৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। প্রথম পর্বের উচ্ছেদ অভিযান শেষে ৯ ফেব্রুয়ারি ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছিলেন, ‘চার-পাঁচ দিনের মধ্যে’ দ্বিতীয় পর্যায়ে কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ফের শুরু হবে। তবে এর পর আর উচ্ছেদ অভিযান শুরু না হওয়ায় এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এই প্রেক্ষাপটে আবার হাই কোর্টে আসে এইচআরপিবি।

সর্বশেষ খবর