সোমবার, ১৩ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

এমপিও পাচ্ছেন না অনেক শিক্ষক

আকতারুজ্জামান

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে আবেদন করে চাকরি পেয়েও বিপাকে পড়েছেন অনেক শিক্ষক। এমপিও করার জন্য আবেদন করলেও সে আবেদন বাতিল হয়ে গেছে নানা কারণে। তাই পাচ্ছেন না বেতন-ভাতাও। এদের বেশিরভাগ নারী কোটার কারণে বেতনভুক্ত হতে পারছেন না। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের পর এই শিক্ষকদের বলা হয়েছে, ২০ শতাংশ নারী কোটা পূরণ না হওয়ায় কোনো পুরুষ শিক্ষকের চাকরি এমপিওভুক্ত হবে না। এতে বিপাকে পড়েছেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষক। তারা সমস্যা সমাধান চেয়ে শিক্ষা সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক (মাউশি) অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের রানাশাল উচ্চ বিদ্যালয়ের হিন্দু ধর্মের সহকারী শিক্ষক দেবুনাথ কর্মকার। এনটিআরসির বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে আবেদন করে গত জানুয়ারিতে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন তিনি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রতিষ্ঠানটিতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। চাকরি এমপিওর (মান্থলি পে-অর্ডার) জন্য অনলাইনে আবেদন করলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবেদন বাতিল করে দেন। কারণ হিসেবে বলা হয়, নিয়োগপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে ২০ শতাংশ মহিলা কোটা পূরণ হয়নি। যতদিন মহিলা কোটা পূরণ হবে না ততদিন এমপিও হবে না। দেবুনাথ কর্মকার এ প্রতিবেদককে বলেন, দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর চাকরি পেয়েছি। সব সমস্যা সমাধান করে আমি দ্রুত এমপিও চাই। মাউশি অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন নূর হোসেন। তিনি ভোলার চরফ্যাশনে হামিদপুর হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান, এ প্রতিষ্ঠানে ২০ শতাংশ মহিলা কোটা পূরণ হয়নি। তাই তারও এমপিও হওয়ার সুযোগ নেই। নূর হোসেন বলেন, মাউশি ও সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। দ্রুত সমস্যার সমাধান চাই।

মিছবাহুজ্জামান নামে এক প্রার্থী মাউশি মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন, ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়ায় বাকতা উচ্চ বিদ্যালয়ে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হন তিনি। ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি নিয়মিত পাঠদান করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটিতে। কিন্তু এমপিওর জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে গেলে কাগজপত্র পাঠাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় শিক্ষা অফিসার বলেন, স্কুলটিতে মহিলা কোটার পদ শূন্য রয়েছে। তাই পুরুষ প্রার্থীদের এমপিও হবে না। কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার পিপুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হন মো. মামুনুর রশিদ। ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মিতভাবে পাঠদান করে আসছেন তিনি। এমপিওর জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে যোগাযোগ করলে তার আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এবং স্কুলটিতে মহিলা কোটা পূরণ না হওয়ায় তার এমপিও হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এসব সমস্যার সমাধান চেয়ে চাকরি পাওয়া এমপিওবঞ্চিত শিক্ষকরা মাউশি মহাপরিচালকের কাছে সম্প্রতি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। গতকাল মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নারী কোটা পূরণ না হওয়া, সাবজেক্ট মিল না থাকাসহ নানা সমস্যার কারণে অনেক প্রার্থী নিয়োগের সুপারিশ পেয়ে যোগদান করেও এমপিওর সুযোগ পাচ্ছেন না। এসব সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করছি।

সর্বশেষ খবর