সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিএনপি নেতারা থাকেন বাইরে, নেই কর্মসূচিতে

নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শরীফুল আলমকে সভাপতি ও মাজহারুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। সাধারণ সম্পাদক জেলা সদরে অবস্থান করলেও সভাপতির বাড়ি কুলিয়ারচর উপজেলায়। সভাপতিসহ জেলা নেতাদের অনেকেই বেশির ভাগ সময় জেলার বাইরে অবস্থান করেন। তবে বড় কোনো কর্মসূচিতে তাদের কেউ কেউ এসে অংশ নেন।

কমিটি গঠনের পরও দলে আগে থেকে চলে আসা বিরোধ ও গ্রুপিং মীমাংসা হয়নি। নেতাদের মধ্যে ঐক্য না থাকার ফলে তৃণমূলের বড় অংশের আস্থাও অর্জন করতে পারেনি কমিটি। সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি খুব একটা দেখা  যায় না। জেলা নেতাদের অনেকেই কমিটির বাইরে নিজ নিজ বলয় সৃষ্টি করে অবস্থান করে আছেন বলেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। কমিটি নিয়ে বিরোধ ও নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কারণে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে জেলা নেতাদের অনেকেই এক মঞ্চে আসেননি। পরের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দল অংশ না নিলেও দলের মধ্যম সারির অনেক নেতা প্রকাশ্যে ও গোপনে নিজের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। এ অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পরও নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ ঠেকানো যায়নি। দলের উপজেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোতেও রয়েছে বিরোধ। অনেক উপজেলা কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও গ্রুপিং ও কোন্দলের কারণে সম্মেলন করতে পারছে না। তৃণমূলের অনেকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, জেলার নেতারা দলীয় ভিত্তি মজবুত করার চেয়ে নিজেদের বলয়ের পরিধি বাড়াতে তৎপর বেশি। এ কারণে জেলার নেতাদের প্রতি তাদের আস্থা দিন দিনই নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় নির্বাচনে নেতাদের বিরুদ্ধে মনোনয়ন-বাণিজ্যের অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ। আর বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও প্রার্থীদেরই এ ক্ষেত্রে গা ছাড়া ভাব ছিল বলেও অনেকের অভিযোগ। কেন্দ্রীয় অনেক নেতার প্রতিও তৃণমূলের এসব নেতা-কর্মীর রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এ অবস্থায় দলের এক সময়ের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের অনেকেই এখনো কমিটির বাইরে নিজস্ব বলয়ে অবস্থান করছেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, জেলায় বিএনপির অনেক নেতাই অনেকটা নিষ্ক্রিয়। সভাপতিসহ অনেক নেতা ঢাকায় অবস্থান করেন। তাদের কেউ কেউ দলের ভিত্তি মজবুত করার চেয়ে নিজেদের বলয়ের পরিধি বাড়াতে ব্যস্ত। ফলে দলে একদিকে যেমন অনৈক্য ও আস্থাহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে, অন্যদিকে সাংগঠনিক কাজে গতি আসছে না। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, দলে পদ-পদবি নিয়ে ক্ষোভ ও মান-অভিমান রয়েছে। তবে বিষয়টা সাংঘর্ষিক পর্যায়ে নেই বলে তার দাবি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর