মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দিন দিন প্রকট হচ্ছে আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব-বিভক্তি

স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থিতা, জেলা কমিটির অভ্যন্তরীণ মনমালিন্য, স্বার্থগত বিষয়সহ নানা কারণে ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব-বিভক্তি দিন দিন প্রকট হচ্ছে। জেলার শীর্ষ নেতাদের প্রতি আস্থাহীনতা বাড়ছে নেতা-কর্মীদের। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে ও। এমন প্রেক্ষাপটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাও জেলা কমিটির অনেক কর্মকান্ডে ও বিব্রত হচ্ছেন।

দলীয় সূত্রমতে, বর্তমান কমিটি গঠনের পর কিছুদিন ঐক্য থাকলেও দিনকে দিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে। এমপি আর নেতাদের একাধিক বলয় হচ্ছে। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচন ঘিরে এসব গ্রুপের মধ্যে মারামারি, হামলা, মামলাসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সমন্বয়হীনতার অভাবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী বিদ্রোহীদের জয় জয়কার হয়। জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয় ২০১৬ সালে। এরপর ওই বছরের ৩০ এপ্রিল উৎসবমুখর পরিবেশে কাউন্সিল হয়। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারণে তখন নাম ঘোষণা করতে পারেননি তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ হোসেন। এর ছয় মাস পর অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকাকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্র থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়। পরে প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে বিতর্কের সম্মুখীন হয় জেলা কমিটি। ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। সেই থেকেই তাদের মধ্যে কার্যত, জেলা কমিটি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি। ময়মনসিংহ জেলার সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা না থাকায় উপজেলা কমিটি করা সম্ভব হচ্ছে না। এমপিদের সঙ্গে আমাদের কোনো দূরত্বও নেই। একটি চক্র আমাদের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, দলীয় এমপিদের প্রাধান্য না দিয়ে জেলা কমিটি বিভিন্ন সময় দলীয় কর্মসূচি ও সভা-সমাবেশ করছে। এমনকি চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আটটির মধ্যে ছয়টিতেই জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। আর বিনা ভোটে নৌকার আরও দুই প্রার্থী নির্বাচিত হন। একাধিক এমপির অভিযোগ, গ্রুপিং স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা এবং নিজস্ব বলয়ের ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়ায় উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক সভা অনুষ্ঠিত হয় নগরীর অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে। শোক সভাটি অডিটরিয়ামে হওয়ায় বৃহৎ দলটির অনেক নেতা-কর্মীই ছিল মূল অনুষ্ঠানের বাহিরে। ওই অনুষ্ঠানেই নিজ বক্তৃতায় স্থান নির্বাচন নিয়ে বিষোদগার করেন নান্দাইলের এমপি আনোয়ারুল আবেদিন তুহিন। এ ছাড়াও জেলা কমিটির প্রায় তিন বছর হতে চললেও এখনো ১২ উপজেলায় কমিটি দিতে পারেনি। এ নিয়েও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে।

সর্বশেষ খবর