শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাদ পড়া ১৯ লাখ নাগরিক তালিকাভুক্তের আহ্বান মমতার

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

বাদ পড়া ১৯ লাখ নাগরিক তালিকাভুক্তের আহ্বান মমতার

আসামে ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজেনস (এনআরসি) অর্থাৎ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখ ‘নাগরিক’কে ফের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি গতকাল দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করে এ দাবি জানান এবং একটি লিখিত চিঠিও দেন। বৈঠকের পর মমতা নর্থব্লকের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন দিয়ে আমার কথা শুনেছেন এবং বলেছেন, ‘আমি দেখব’। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর গতকাল দুপুরে এই প্রথম তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন। মমতা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু নিয়ে কোনো কথা বলেননি। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারও বলেছেন বিহারে এনআরসি হওয়ার প্রয়োজন নেই।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর আমার দেখা হয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাংবিধানিক কারণে প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার প্রয়োজন হয়। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয় ভিন্ন ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এনআরসি নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন হয়েছে।’ মমতা বলেন, ‘আসামে যে উনিশ লাখ মানুষ এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই বাঙালি, হিন্দিভাষী, গোর্খা রয়েছেন। স্থানীয় আসামবাসীও বাদ পড়েছেন। এরা সবাই প্রকৃত ভোটার ভারতীয়। এদের সবাইকে ফের নাগরিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।’ তিনি বলেন, এসব মানুষের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এরা এরপর কী করবে তাই নিয়ে চিন্তিত। প্রশ্ন করা হয়, পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি বলবৎ করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। মমতা বলেন, ‘না। উনি বলেননি। তাছাড়া আপনারা সবাই জানেন এনআরসি নিয়ে আমার অভিমত কী। পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে না।’ এ প্রসঙ্গ ছাড়াও মমতা বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরি নিয়ে এনআরসির কারণে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম রেশন কার্ড করাতে হয়তো এক হাজার মানুষ আসবে। কিন্তু এনআরসির আতঙ্কের পর এখন লাখ লাখ মানুষ সরকারি দফতরে ভিড় করছে। তাই আতঙ্কের পরিবেশ থেকে মানুষকে মুক্ত করা দরকার। মমতা বলেন, আমার বিশ্বাস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। বিশ্বাস করা ছাড়া আর কী-ই বা করতে পারি! বিশদে না বললেও মমতা পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপালের সীমান্ত রয়েছে।’

 তিনি বলেন, এমনকি উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ির কাছে ভারত-ভুটান-চীন ত্রিজাংশান যাকে ‘চিকেন নেক’ বলা হয়, এখানে সে রকম সমস্যা তৈরি হয়েছে। এসব এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এ ছাড়া রাজ্যের সীমানা রয়েছে বিহার-ঝাড়খ -উড়িষ্যার সঙ্গে। এসব এলাকায় ভিনরাজ্য থেকে উগ্রপন্থি মাওবাদীরা প্রবেশ করছে।

সর্বশেষ খবর