রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের জমিতে অবৈধ রেস্তোরাঁ সমিতি অফিস

নিজামুল হক বিপুল

রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় ভবনটি এখন দখলদারদের অভয়াশ্রম। সরকারি সম্পত্তি জবরদখল করে গড়ে উঠেছে একাধিক প্রতিষ্ঠানের অফিস আর রেস্তোরাঁ। বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের লাগোয়া ভবনটি ঘিরে এসব অফিস আর রেস্তোরাঁ হওয়ায় নিরাপত্তা ঝুঁকির প্রশ্নও উঠেছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে প্রায়ই নানান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে থাকেন।  এ অবস্থায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পক্ষ থেকে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিলেও কোনো পরোয়া করছে না দখলকারীরা। এমনকি অধিদফতরের মহাপরিচালক পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপপুলিশ কমিশনার ও পুলিশ কমিশনারকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য চিঠি দেওয়ার পরও দখলবাজরা আরামেই আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের বিভিন্ন পত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরসূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির খামারবাড়ি অফিসের অভ্যন্তরে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের (কেবিআই) দেয়াল-ঘেঁষে সরকারি জমিতে অনুমতি না নিয়েই গত বছর ব্যবসা শুরু করে ‘কৃষাণ রেস্তোরাঁ’। একইভাবে অধিদফতরে প্রবেশপথের হাতের ডান পাশে নিবন্ধনহীন ‘প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ঠিকাদার কল্যাণ সমিতি’র অফিস গড়ে তোলা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরে বহিরাগতদের আসা-যাওয়া বেড়ে গেছে। ফলত অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকটা ভয়ভীতির মধ্যে কাজ করেন। জানা গেছে, কর্তৃপক্ষীয় আপত্তি সত্ত্বেও জ্যোতিপ্রকাশ বড়ুয়া নামে এক ব্যক্তি কেবিআইর দেয়াল-ঘেঁষে ‘কৃষাণ রেস্তোরাঁ’ চালু করেন। কেপিআই মিলনায়তনে প্রায়ই সভা-সমাবেশ হয় যার কোনো কোনোটিতে সরকারপ্রধানও উপস্থিত থাকেন। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে কোনো দোকানপাট না থাকাটা শ্রেয়। ‘প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ঠিকাদার কল্যাণ সমিতি’র অফিসটি নিয়ে বিভিন্ন সময় আপত্তি তোলা হলেও অফিসটি সরানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছেন, তেজগাঁও থানার ২৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বাশার, সাদেকসহ একাধিক নেতা ওই অফিসটি ব্যবহার করেন। তারা আবার প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ঠিকাদারও। এসব অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি লিখিতভাবে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান অধিদফতরের উপপরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি আরেক দফা চিঠি দেওয়া হয়। তাতে কোনো কাজ না হওয়ায় ১০ মার্চ মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক মহানগর পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপপুলিশ কমিশনারকে এক চিঠিতে অবিলম্বে উচ্ছেদ পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান। চিঠিতে বলা হয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আট মাসেও কোনো ফলোদয় হয়নি। স্থাপনা উচ্ছেদ হয়নি।

সর্বশেষ খবর