মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
৫০ কোটি টাকার কাজ শেষ

আনোয়ারায় দৃশ্যমান হচ্ছে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

আনোয়ারায় দৃশ্যমান হচ্ছে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় নির্মাণাধীন চীনা অর্থনৈতিক ও শিল্প জোন ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে। এরই মধ্যে নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন কার্যালয়, তৈরি হয়েছে সীমানা দেয়াল, ভূমি অধিগ্রহণ ও অবকাঠামো। বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। তৈরি হয়েছে প্রকল্পের অভ্যন্তরের প্রধান সড়কও।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালের ১৬ জুন ইকোনমিক জোন স্থাপনে বেজা ও চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আনোয়ারার কেইপিজেড এলাকায় চায়না ও বাংলাদেশ সরকার (জি টু জি) যৌথ মালিকানা ভিত্তিতে ৭৮৩ একর জমিতে চীনা ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। এ জোনে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্য আছে। কর্মসংস্থান হবে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের। এরই মধ্যে নির্মিত হয়েছে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার ৫০ বর্গফুটের দৃষ্টিনন্দন সুরম্য প্রকল্প কার্যালয়। এখানে আছে অতিথি কক্ষ, বেজা ও চায়নার পৃথক অফিস, কনফারেন্স রুম। নির্মিত হয়েছে দুটি সড়ক। এর মধ্যে রয়েছে আনোয়ারার পিএবি প্রধান সড়ক কালাবিবি দীঘি থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চল পর্যন্ত এক কিলোমাটর দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের এবং অপরটি বৈরাগ থেকে ইকোনমিক জোন পর্যন্ত চারলেনের এক কিলোমিটার সড়ক। নির্মিত হয়েছে সীমানা দেয়াল। সমান করা হয়েছে প্রকল্প এলাকার পাহাড়ি টিলাগুলো। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো জি টু জি ভিত্তিতে বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান দেশে ইকোনমিক জোন স্থাপন করছে। শিগগিরই এ জোনে বিনিয়োগ বিষয়ে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হবে। চুক্তির পর আনুষ্ঠানিকভাবে বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ আসবে। এতে কমপক্ষে দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এরই মধ্যে জোন তৈরির মূল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সীমানা দেয়াল নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ সড়ক তৈরিসহ নানা অবকাঠামোর কাজ চলছে।’ সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, চীনা শিল্প জোনের বৈরাগ এলাকার উত্তর পাশে নির্মাণ করা হয়েছে সীমানা প্রাচীর। বেজার নামে তৈরি করা হয়েছে গেট। গেটে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা প্রহরী। সংরক্ষিত করা হয়েছে সাধারণের যাতায়াত। কালাবিবির দীঘির মোড় থেকে একটি এবং পূর্ব বৈরাগ এলাকা হয়ে একটি, দুটি সড়ক শিল্প জোনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। শ্রমিকরা টিলা সমানের কাজ করছেন। বেজা সূত্রে জানা গেছে, এ ইকোনমিক জোনে হবে দেশের বিকাশমান ও রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাণ শিল্প, ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রী, ওষুধ, তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, রাসায়নিক, মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট, প্লাস্টিক পণ্য, আইটি পণ্য, ফার্নেস ও সিমেন্ট শিল্প। এতে স্থাপন করা হবে ৩৭১টি শিল্প-কারখানা। ভৌগোলিকভাবে শিল্প জোনটি ইতিবাচক স্থানে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯ কিলোমিটার, নগর থেকে ২৮ কিলোমিটার, শাহআমানত বিমানবন্দর থেকে শহর হয়ে ৪৬ কিলোমিটার, বহুল কাক্সিক্ষত কর্ণফুলী টানেলের পূর্ব পাড় থেকে ৭ কিলোমিটার ও সিইউএফএল জেটি সংলগ্ন ১৫ নং ঘাট থেকে ৬ কিলোমিটার দূরত্বে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল অবস্থিত। ফলে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এ শিল্পজোনের গুরুত্ব বাড়ছে।

সর্বশেষ খবর